সোনাজয়ী বক্সারের ‘ময়লাওয়ালার’ জীবন

কদিন আগেই সংবাদমাধ্যমের আলোচিত খবরগুলোর একটি ছিল পাকিস্তানের ক্রিকেটার আরশাদ খানের টেক্সিচালকের জীবন। সেই খবরের রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে এলো ভারতে জাতীয় পর্যায়ে পাঁচবার স্বর্ণজয়ী বক্সার কমল কুমারের ‘ময়লাওয়ালার’ জীবন।
সোনাজয়ী এই বক্সারের করুণ জীবন নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। কমল কুমার এক সময় ভারতীয় বক্সিংয়ে বেশ নাম করেছিলেন। দুবার অংশ নিয়েছিলেন অলিম্পিকেও। পেয়েছিলেন সম্মান ও খ্যাতি। সেই সময়কার ভারতীয় পত্রিকাগুলোতে তাঁকে নিয়ে করা কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। মঞ্চে বিজয়ীর বেশে পুরস্কার নেওয়ার ছবি আছে দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে। তারপর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াইতে হেরে গেছেন। বক্সিং গ্লাভস ঘরেই তুলে রেখেছেন। এখন তিনি ‘সাবেক’।
তবে সাবেক হলেও পেট তো আর কথা শুনে না। পরিবার রয়েছে তাঁর। চার ছেলেমেয়ে। খাওয়াতে পরাতে হয়। বাধ্য হয়ে রাস্তার ময়লা পরিষ্কার করার কাজে নেমে পড়েছেন কানপুরের এই বক্সার। কমল বলেন, ‘একসময় যারা খাতির করতো, অবসর নেওয়ার পর সারাদিন তাদের পেছনে ঘুরে একটা সরকারি চাকরি জোটেনি। গোটা জীবনে বক্সিংয়ে সাফল্য কাজেই এলো না। সোনা জয়ের সম্মান গিয়ে ঠেকল রাস্তার ময়লা পরিষ্কারে।’
নিজের জীবনে ‘ব্যর্থ’ হলেও সন্তানদের নিয়ে বড় আশা কমলের। কমলের চার সন্তানের মধ্যে ২ জন বক্সার। বড় ছেলেকে নিজেই অনুশীলন করান তিনি। ছেলে জাতীয় স্তরে খেলছে বলে জানিয়েছেন কমল। তিনি বলেন, ‘এখন না হয় ভাগ্যের ফেরে রাস্তায় নেমে গেছি। তবে এ জীবন সম্মানের। আমি নিশ্চিত আমার ছেলেরা স্বপ্নপূরণ করবে।’ আবার বলতে থাকেন, ‘তবে তাদের বাবার মতো বোকা না হতে পরামর্শ দিব আমি। সময় থাকতে যেন নিজেরটুকু গুছিয়ে নেয়।’ এটুকু বলে মৃদু হাসেন কমল। সে হাসিতে লুকিয়ে আছে অনেক কিছু। দুঃখ- আনন্দ হয়তো কিছুটা গর্বও !