কারাবন্দি ‘ধর্ষক’ যখন পাঠ্যবইয়ের মহান সাধু!

কারাবন্দি আসামি হয়ে গেলেন পাঠ্যপুস্তকের ‘মহান সাধু’। শুধু তাই নয়, সেই আসামির ঠাঁই হয়েছে শিশুদের পাঠ্যপুস্তকেও। অথচ এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছেন ভারতের স্বঘোষিত সাধু আশারাম বাপু। অথচ সেই আশারামকে আবার পাঠ্যবইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে ‘মহান সন্ত’ হিসেবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে জানানো হয়, ভারতের রাজস্থান রাজ্যের যোধপুরের বিভিন্ন স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক ‘ন্যায় উজ্বালা’ বইয়ের ৪০ নম্বর পাতায় আশারাম বাপুর ছবি স্থান পেয়েছে। বইতে তাঁর পাশেই আছে গৌতম বুদ্ধ, স্বামী বিবেকানন্দ, মাদার তেরেসাঁ, শ্রীরামকৃষ্ণ, গুরু নানকের মতো মনীষীদের ছবি। যা নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। দেশের বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে আশারাম বাপুর মতো একজন আসামির নাম শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে তোলা হয়?
অভিযোগ উঠেছে, বইটি এরই মধ্যে যোধপুরের বিভিন্ন স্কুলে পড়ানোও শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিকে দেশজুড়ে তীব্র বিতর্কের জেরে বইটির প্রকাশন সংস্থা ‘গুরুকুল প্রকাশন’ দাবি করেছে, ভারতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিইআরটি) নির্দেশিকা মেনেই বইটি প্রকাশ করা হয়েছে। আর যোধপুরের জেলার এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, এই বইটি নিয়ে কোনো তথ্য তাঁদের কাছে নেই।
তবে রাজস্থান শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, বইটি যখন ছাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখন আশারামের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। বইগুলো বাজার থেকে তুলে খুব শিগগির নতুন সংস্করণ প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষকে বইটি পড়ানো বন্ধ রাখতে নোটিশ পাঠানো হবে বলেও জানান শিক্ষা দপ্তরের ওই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে যোধপুর জেলে বন্দি রয়েছেন আশারাম বাপু ও তাঁর ছেলে নারায়ণ সাঁই। আশারামের বিরুদ্ধে ১৩ বছরের এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর ছেলে নারায়ণ সাঁইও দুজন সন্ন্যাসিনী ও সুরাটের বাসিন্দা দুই নাবালিকা বোনকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত। এ ছাড়া ৭৩ বছর বয়সী আশারাম বাপুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ এবং নাবালিকাদের অবৈধভাবে আটক রাখার মামলা রয়েছে।