চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭০

চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছেই। আজ বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত আট হাজার জনে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে, গত মঙ্গলবার ডব্লিউএইচওর প্রধানের সঙ্গে এক বৈঠকে এ করোনাভাইরাসকে ‘শয়তান’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার অঙ্গীকার করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেন, ‘নতুন করোনাভাইরাস একটি শয়তান। আমরা এ শয়তানকে গুপ্তঘাতক হয়ে থাকতে দিতে পারি না। চীন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করবে এবং ভাইরাস প্রতিরোধ কর্মসূচিতে ডব্লিউএইচওর অংশগ্রহণকে স্বাগত জানাবে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পূর্ণ আত্মবিশ্বাস এবং সক্ষমতা চীনের আছে।’
এরই মধ্যে চীনের উহান শহর থেকে নিজ দেশের বাসিন্দাদের ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বুধবার উহান থেকে জাপানে ফিরেছেন দেশটির ২০৬ জন নাগরিক। আরো ৬৫০ জনকে ফিরিয়ে আনতে অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনও গতকাল বুধবার বলেছেন, ‘যেসব অসি নাগরিক হুবেই প্রদেশ ছাড়তে আগ্রহী, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা দেওয়া হবে।’ স্কট মরিসন আরো বলেন, ‘হুবেই প্রদেশে থাকা আমাদের নাগরিকদের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির কথা ভেবে আমরা আগ্রহীদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। এ ক্ষেত্রে শুরুতে হুবেই থেকে ক্রিসমাস দ্বীপে এনে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা চালানো হবে। সেখানে আমাদের বিশেষ একটি মেডিকেল টিম এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে, শ্রীলঙ্কায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এরপরই চীনা নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। এ ছাড়া চীনের সঙ্গে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্য। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে কারো মৃত্যু না ঘটলেও বিশ্বের প্রায় ১৭টি দেশে এরই মধ্যে ছড়িয়ে গেছে ভাইরাসটি।
এরই মধ্যে করোনাভাইরাস ঠেকাতে পুরো বিশ্বকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এ ভাইরাস মোকাবিলায় চীনের প্রশংসা করে ডব্লিউএইচওর জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রধান মাইক রায়ান বলেন, ‘এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ; কিন্তু এর প্রতিক্রিয়া চরম।’ আজ বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাস সম্পর্কে এক জরুরি বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে, এ ভাইরাস সম্পর্কে আরো জানতে এবং এ ভাইরাস কীভাবে সংক্রমণ হয়, সে বিষয়ে আরো ধারণা নিতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল চীন যাবে বলে জানান মাইক রায়ান।
সম্প্রতি চীন সফর করা ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম জানান, এ ভাইরাস সংক্রমণের পর বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে ‘সামান্য লক্ষণ’ দেখা গেছে। তবে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ নিউমোনিয়া ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছেন।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক আরো জানান, চীনের জন্য ‘বিশ্বের সংহতি ও সমর্থন প্রয়োজন’ এবং এ পরিস্থিতিতে ‘পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে একত্র হতে হবে’।