এশিয়া কাপ
ভারতের সঙ্গে পারল না বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও একই লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ। স্বপ্ন দেখেছিলেন ভক্তরা। ব্যাট হাতে শুরুর দিকে বাংলাদেশ খেলছিল দেশেশুনেই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পারেনি। চিরায়ত ব্যাটিং ব্যর্থতায় থেমেছে জয় থেকে অনেক দূরে। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছে ৪১ রানে।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ২০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৬৮ রান। জবাবে ১৯.৩ ওভারে ১২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। জাসপ্রিত বুমরাহকে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন শিভাম দুবের হাতে। ফেরার আগে ৩ বলে ১ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪০ রান তুলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন সাইফ হাসান আর পারভেজ হোসেন ইমন। তবে পাওয়ার-প্লের পরের ওভারেই কুলদীপ যাদবের বলে ফেরেন ইমন। ফেরার আগে ১৯ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
আগের ম্যাচে অর্ধশতক পাওয়া তাওহিদ হৃদয়কে বিদায় করেন অক্ষর প্যাটেল। ১০ বলে ৭ রান করে অভিষেক শর্মার তালুবন্দি হন তিনি। ৬৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া বাংলাদেশের বিপদ বাড়ান শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ৩ বল খেলে রানের খাতা খোলার আগে বিদায় নেন বরুণ চক্রবর্তীর বলে বোল্ড হয়ে। ৭৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
জাকের রান আউট হলে বিপদ বাড়ে দলের। ৫ বলে ৪ রান করেন জাকের। ৮৭ রানে নেই ৫ উইকেট। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো। একপ্রান্তে সাইফ খেলছিলেন। বারবার জীবেন পেয়েছেন উড়িয়ে মারতে গিয়ে। তবে, পারেনিন জেতাতে। বুমরাহর বলে অক্ষর প্যাটেলের হাতে ধরা পড়ার আগে ৫১ বলে তিনটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন সাইফ।
ভারতের পক্ষে কুলদীপ তিনটি এবং বুমরাহ ও বরুণ নেন দুটি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম পাওয়ার প্লেতে ভারত তোলে ৭২ রান। ব্যাটিং ঝড় থামান রিশাদ হোসেন। ১৯ বলে ২৯ রান করা গিলকে বিদায় করেন রিশাদ। বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ ধরেন তানজিম হাসান সাকিব। ৭৭ রানে ভাঙে ভারতের উদ্বোধনী জুটি। এক ওভার পর বোলিংয়ে এসে আবারও সাফল্য এনে দেন রিশাদ। নবম ওভারের প্রথম বলে তিনি ফেরান শিভাম দুবেকে। ২ রান করে লং অফে তাওহিদ হৃদয়ের তালুবন্দি হন দুবে।
অভিষেক শর্মাকে রান আউট করতে মুস্তাফিজুর রহমান যখন স্ট্যাম্প ভাঙেন, বল হাতে ছিল কি না, দেখছিলেন টিভি আম্পায়ার। আম্পায়ার বেশ কয়েকবার দেখলেন। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সময় নিয়ে। শেষ পর্যন্ত স্ক্রিনে ভেসে ওঠে, এটি আউট। বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেওয়া অভিষেক বিদায় নেন। তাকে ফিরিয়ে স্বস্তি আসে বাংলাদেশ শিবিরে। ৩৭ বলে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৭৫ রান করেন অভিষেক।
একই ওভারে মুস্তাফিজ ফেরান সূর্যকুমার যাদবকে। মুস্তাফিজের ফুলটসে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে জাকের আলীর হাতে ধরা পড়েন যাদব। পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে তিলক ভার্মারকে বিদায় করেন তানজিম হোসেন সাকিব। ৫ রান করে ডিপ মিড উইকেটে সাইফ হাসানকে ক্যাচ দেন তিলক।
শেষ দিকে হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটে চড়ে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দাঁড় করায় ভারত। ইনিংসের শেষ বলে সাইফউদ্দিনের শিকার হন পান্ডিয়া। তানজিদ হাসান তামিমের তালুবন্দি হওয়ার আগে ২৯ বলে ৩৮ করেন পান্ডিয়া।
বাংলাদেশের পক্ষে রিশাদ দুটি এবং মুস্তাফিজ, সাইফউদ্দিন ও সাকিব পান একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত : ২০ ওভারে ১৬৮/৬ (অভিষেক ৭৫, গিল ২৯, দুবে ২, যাদব ৫, পান্ডিয়া ৩৮, তিলক ৫, অক্ষর ১০*; সাকিব ৪-০-২৯-১, নাসুম ৪-০-৩৪-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৩-১, সাইফউদ্দিন ৩-০-৩৭-১, রিশাদ ৩-০-২৭-২, সাইফ ২-০-৭-০)
বাংলাদেশ : ১৯.৩ ওভারে ১২৭/১০ (সাইফ ৬৯, তামিম ১, ইমন ২১, হৃদয় ৭, শামীম ০, জাকের ৪, সাইফউদ্দিন ৪, রিশাদ ২, সাকিব ০, নাসুম ৪*, মুস্তাফিজ ৬; পান্ডিয়া ২-০-১৪-০, বুমরাহ ৪-০-১৮-২, বরুণ ৪-০-২৯-২, কুলদীপ ৪-০-১৮-৩, অক্ষর ৪-০-৩৭-১, দুবে ১-০-১০-০, তিলক ০.৩-০-১-১)
ফল : ভারত ৪১ রানে জয়ী।