অ্যাশেজের চেয়েও ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজকে এগিয়ে রাখছেন অশ্বিন

সর্বকালের অন্যতম সেরা টেস্ট সিরিজগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা ২০০৫ সালের অ্যাশেজকে। সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড-ভারতের অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিকে সেটির সঙ্গে তুলনা করছেন অনেকে। এর অবশর্য কারণ আছে। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের সবগুলোতে ব্যাটে-বলের লড়াই জমে উঠেছে। রোমাঞ্চ-উত্তেজনা পারদ ছড়িয়েছে ২২ গজে। এবার ভারতের সাবেক স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন জানালেন, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার সেই অ্যাশেজকেও ছাড়িয়ে গেছে এবারের ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজ।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক আলাপে অশ্বিন বলেন, ‘অনেকে এই সিরিজকে ২০০৫ সালের অ্যাশেজের সঙ্গে তুলনা করছেন। তবে আমার মনে হয় এই সিরিজটি এমনকি ২০০৫ সালের অ্যাশেজের চেয়েও বরং ভালো ছিল, কারণ (এবারের সিরিজে) অনেক কিছুই নিখুঁত ছিল না, দুই দলেই।’
২০০৫ সালের সেই দলের ব্যাখায় অশ্বিন বলেন, ‘যদি সেই অস্ট্রেলিয়ান দলের দিকে তাকান, সেখানে গ্লেন ম্যাকগ্রা, শেন ওয়ার্ন, মাইকেল ক্যাসপ্রোইচ, শন টেইট ছিল। আরেক দিকে (ইংল্যান্ডের) ছিল সাইমন জোন্স, স্টিভ হার্মিসন, অ্যাশলি জাইলস। বোলিং বিভাগ অনেক অভিজ্ঞ ছিল। ব্যাটিংয়েও অভিজ্ঞতা ছিল। তীব্র প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ছিল। সেখানে খুব বেশি ভুল দেখতে পাবেন না।’
২০ বছর আগের সেই অ্যাশেজও ছিল বেশ রোমাঞ্চকর। অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার দেড় যুগের আধিপত্য থামিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের রোমাঞ্চকর জয়, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হারতে হারতে শেষ জুটিতে ম্যাচ জয় মাঠ ও মাঠের বাইরে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছিল। এছাড়া স্টিভ হার্মিসনের বাউন্সারে রিকি পন্টিংয়ের রক্তাক্ত হওয়া, ওভালে তরুণ কেভিন পিটারসেনের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি সেই লড়াইয়ে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছিল।
ইংল্যান্ড-ভারতের এই সিরিজে লড়াইও ছিল এমনই। ওভালে শেষ দিনে ৪ উইকেট হাতে রেখে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৩৫ রান। কিন্তু মোহাম্মদ সিরাজ ও প্রসিধ কৃষ্ণার দুর্দান্ত বোলিংয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি ইংলিশরা। ৬ রানের অবিশ্বাস্য জয়ে ২-২ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে ভারত। অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার সিরিজ রেকর্ড বই ওলটপালট করে ছেড়েছে। ১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো এক সিরিজে সাত হাজার বা এর বেশি রান হয়েছে। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও নজর কেড়েছিলেন বেশ কয়েকজন।
পুরো সিরিজে এমন লড়াই দেখতে মাঠেও উপস্থিত ছিলেন সমর্থকরা। দুই দলের এমন রোমাঞ্চকর লড়াই মাঠে যাওয়া দর্শকদের পয়সা উসুল করেছে বলে মনে করেন অশ্বিন।
সাবেক ভারতীয় এই স্পিনার বলেন, ‘যারা অর্থ খরচ করে ম্যাচ দেখতে গিয়েছে, কেউ বলবে না যে, তাদের অর্থ নষ্ট হয়েছে। ২৫ দিনের উত্তেজনাপূর্ণ ক্রিকেট। এই সিরিজটি দেখার জন্য আমি যে কোনো কিছু করতে পারতাম, একটি মুহূর্তও মিস করিনি আমি।’
অনেকটা তারুণ্য নির্ভর দল নিয়েই ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিল ভারত। চোট জর্জরিত ইংল্যান্ডও পূর্ণ শক্তি পায়নি। ফলে অনেকেই সিরিজে ভুল করেছে। তবে, আবার তারা সেটা শুধরেও নিয়েছে। যেটা মুগ্ধ করেছে অশ্বিনকে।
অশ্বিন বলেন, ‘এই সিরিজে অনেক ভুল ছিল। তবে তরুণ খেলোয়াড়রা তাদের ভুল শুধরে নিয়েছে ও সিরিজের মাঝেই আরও উন্নতি করেছে। অনেক ভুল হয়েছে। ২০০৫ সালের অ্যাশেজ অনেক বেশি পরিপূর্ণ ছিল, কিন্তু এই সিরিজে আমরা অনেক ভুল দেখতে পেয়েছি।’