বাংলাদেশের সামনে এবার সম্ভাবনা বিশ্বকাপে খেলার

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল অদম্য, অপ্রতিরোধ্য, দুর্দান্ত। একের পর এক ইতিহাস গড়ে আনন্দের উপলক্ষ এনে দিচ্ছেন ঋতুপর্ণা-মনিকারা। সাফল্যের মালায় পুঁতির মতো গেঁথে চলেছেন জয়। এবার দেশের ফুটবলে নতুন এক ইতিহাস গড়েছে নারীরা। প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে। র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারকে হারিয়ে এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
নারীদের সাফল্যে খুলেছে নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার। ২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কাপে চূড়ান্ত পর্ব কাজ করবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব হিসেবেও। সেখানে ভালো করতে পারলে সুযোগ মিলতে পারে ২০২৭ সালের নারী বিশ্বকাপে। যদিও সেটি বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারের দলের জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা হবে। তবু কাগজে-কলমে সেই সম্ভাবনা আছে।
২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে এএফসি নারী এশিয়ান কাপ। যেখানে অংশ নেবে মোট ১২টি দল। এর মধ্যে সরাসরি খেলার সুযোগ পেয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চীন, রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া ও তৃতীয় হওয়া জাপান। বাকি আট দলকে যেতে হবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে। বাংলাদেশ প্রথম দল হিসেবে ‘সি’ গ্রুপ থেকে সেই কাজ করে ফেলেছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে।
২০২৭ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে এশিয়ান অঞ্চল থেকে খেলবে মোট ৮টি দল। এর মধ্যে ২০২৬ এশিয়ান কাপের মূল পর্বের সেমিফাইনালে খেলা ৪টি দল সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে। কোয়ার্টার ফাইনালে বাদ পড়া ৪ দল মুখোমুখি হবে দুটি প্লে-অফ ম্যাচে। এখান থেকে জয়ী দুই দল সুযোগ পাবে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার। তবে বাকি দুই দলের জন্যও সুযোগ থাকছে। এরপর তারা খেলার সুযোগ পাবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ।
এশিয়ান কাপের মুল পর্বে ১২টি দল তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। প্রতিটি গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল এবং তৃতীয় সেরা হওয়া দুটি দল উঠবে কোয়ার্টার ফাইনালে। বাংলাদেশ যদি সেই পর্যন্ত নিজেদের নিয়ে যেতে পারে, তাহলে স্বপ্ন সত্যি হতে পারে।
বাংলাদেশের সামনে সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে আরেকটি। ২০২৮ সালে অনুষ্ঠিত হবে অলিম্পিকের পরের আসর। যেখানে থাকে ফুটবল ইভেন্টও। বাংলাদেশ সুযোগ করে নিতে পারে অলিম্পিকের ফুটবলের বাছাইপর্ব খেলারও।
এক্ষেত্রে ২০২৬ সালের এশিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা ৮টি দল সুযোগ পাবে ২০২৮ অলিম্পিক ফুটবলের বাছাইপর্ব খেলার। বাছাইপর্ব নিশ্চিত হওয়া এই ৮টি দল আবার ভাগ হবে দুই গ্রুপে। সেখান থেকে দুই চ্যাম্পিয়ন সুযোগ পাবে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০২৮ অলিম্পিকে।
তবে সবকিছু নির্ভর করছে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের উপর। সেখানে যদি অবিশ্বাস্য কিছু করতে পারে রুপনা-আফঈদারা তাহলে স্বপ্ন সত্যি হতে পারে। পিটার বাটলাররের দলের বর্তমান পারফরম্যান্স বাংলাদেশি সমর্থকদের কিছুটা আশা দেখাচ্ছে।