বাংলাদেশের ফুটবলের এই সময়টার জন্য বহুদিন অপেক্ষা করেছে ভক্ত-সমর্থকরা। মঙ্গলবার (১০ জুন) এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে বাংলাদেশ হারলেও যেভাবে খেলেছে, তাতে দর্শকরা ভবিষ্যতে ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছেন।

ফুটবলের এই নবজাগরণ, ফুটবল নিয়ে এত উচ্ছ্বাসের অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রবাসী ফুটবলারদের দেশের হয়ে খেলা। গতকাল হামজা-শমিতরা যে খেলাটা উপহার দিলেন এমনটাই হয়ত চাইছিলেন সমর্থকরা। প্রবাসী ফুটবলারদের দেশের হয়ে খেলার এই ধারাটা শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।  

লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করতে, দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে ডেনমার্ক থেকে এসেছিলেন স্বপ্ন নিয়ে, নিজের কাজটাও করে যাচ্ছিলেন ঠিকভাবে। মাঠে যতটুকু সময় পান, নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করে যান।

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মাঠে নামেননি, কিন্ত গ্যালারি থেকে সমর্থকদের কন্ঠে ঠিকই শোনা গেছে জামালের নাম। না থেকেও ছিলেন তিনি। ম্যাচ শেষে যখন ফিরছিলেন মুখটা মলিনই ছিল। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, মাঠে যতটুকু সময় পবেন নিজের কাজটা ঠিকভাবে করে যেতে চান। কিন্তু তার মাঠে নামা নির্ভর করছে কোচের পরিকল্পনার ওপর। অথচ বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা সিঙ্গাপুর ম্যাচের জন্য জামালকে পরিকল্পনাতেই রাখেননি।

অধিনায়ক হিসেবে জামাল সংবাদ সম্মেলনে আসলেন কিন্তু পরদিন তাকে আর মাঠে দেখা গেল না, এমনটি প্রথম নয়। এর আগে শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে নিয়মিত অধিনায়ক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন। ম্যাচের দিন ছিলেন দর্শক হয়ে। ৩৫ বছর জামাল নিজেও হয়ত এমনটা চাননি।

প্রশ্ন উঠছে, তবে কি কাবরেরা বড় ম্যাচের পরিকল্পনা থেকে জামালকে সরিয়েই রেখেছেন? অধিনায়ক হিসেবে তার দায়িত্ব সংবাদ সম্মেলনে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ? নাকি বয়স এখানে বাধা? সাম্প্রতিক দিনগুলোতে জামাল ঠিক পুরোনো ছন্দে নেই। তাই বলে, ৯০ মিনিট ব্রাত্য থাকার মতো ছন্দহীনও হয়ে পড়েননি নিশ্চয়ই! জামাল ছন্দে আছেন কি না, তা দেখতে বেশিদূর যেতে হবে না। ভুটানের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে হামজার প্রথম গোল এসেছিল তার কর্ণার থেকেই। সেই তিনি নেই পরের ম্যাচে।

গতকাল যখন বাংলাদেশ টানা চারটি কর্ণার পেল, দর্শকের চোখ হয়তো খুঁজে ফিরছিল জামালকে। জামালও কি বসে বসে ভাবছিলেন, যদি মাঠে থাকা যেত! বড় ম্যাচে নিজেকে প্রমাণ করবেন সেই সুযোগ দিলেন না কাবরেরা। কে জানে, ধীরে ধীরে জামালের দরজা বন্ধ হচ্ছে বোধহয়!