ক্রিকেটের সব্যসাচী বোলাররা

টি-টোয়েন্টির প্রভাবে ক্রিকেটে ক্রমে কমছে বোলারদের দাপট। ব্যাটসম্যানদের অভিনব সব উদ্ভাবনী শটের সামনে যেন কিছুটা দিশেহারাই হয়ে যেতে হচ্ছে বোলারদের। তবে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বোলাররাও যেন নিজেদের নিয়ে যেতে চাইছেন নতুন উচ্চতায়। কেউ কেউ রপ্ত করছেন দুই হাতেই বোলিং করার অভিনব কৌশল। বুধবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ম্যাচে এমনই এক বিস্ময় বোলারকে দেখল ক্রিকেটবিশ্ব। দুই হাতেই বল করে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ১৭ বছর বয়সী স্পিনার কামিন্দু মেন্ডিস। ক্রিকেটবিশ্ব অবশ্য এমন সব্যসাচী বোলারের দেখা আগেও পেয়েছে। তেমনই কিছু বিরল মুহূর্তের কথা থাকছে এই প্রতিবেদনে।
হানিফ মোহাম্মদ
পাকিস্তানের এই কিংবদন্তি ক্রিকেটারকে দেশটির প্রথম ব্যাটিং সুপারস্টার হিসেবেই জানে সবাই। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে টেস্ট ইনিংস খেলার রেকর্ডটি এখনো আছে হানিফ মোহাম্মদের দখলে। ১৯৫৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৭০ মিনিট ব্যাটিং করে ৩৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান। তবে তিনি যে দুই হাতেই বল করতে পারতেন, এই তথ্য হয়তো অনেকেরই অজানা।
নিয়মিত বোলারের ভূমিকায় কখনো দেখা যায়নি হানিফকে। ১৯৫৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ডান হাতে বল করতে করতে হঠাৎ করেই কিছু বল করেছিলেন বাঁ হাতে। এই ম্যাচেই ৩৬৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে রেকর্ড গড়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান স্যার গ্যারিফিল্ড সোবার্স। সে সময় এটিই ছিল টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড।
গ্রাহাম গুচ
ইংল্যান্ডের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান গ্রাহাম গুচ ছিলেন খণ্ডকালীন বোলার। ১১৮ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৩টি উইকেটও নিয়েছেন এই ডানহাতি মিডিয়াম পেসার। কিছু ম্যাচে তাঁকেও বল করতে দেখা গেছে দুই হাতে। তবে এটা গুচ করেছিলেন শখের বশে। যে ম্যাচগুলোতে দলের হেরে যাওয়ার কোনোই আশঙ্কা নেই, সেই ম্যাচগুলোতেই গুচ পরিণত হয়েছিলেন সব্যসাচী বোলারে।
হাসান তিলকারত্নে
হানিফ মোহাম্মদ ও গ্রাহাম গুচের মতো হাসান তিলকারত্নেও ছিলেন মূলত ব্যাটসম্যান। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান শ্রীলঙ্কার পক্ষে খেলেছিলেন ৮৩টি টেস্ট ও ২০০টি ওয়ানডে। অল্প কিছু ম্যাচে অফস্পিনও করতে দেখা গেছে তিলকারত্নেকে। ওয়ানডেতে ছয়টি উইকেটও নিয়েছেন ডানহাতি অফস্পিন দিয়ে। শ্রীলঙ্কান এই ক্রিকেটারকেও একটি ম্যাচে বল করতে দেখা গিয়েছিল দুই হাতে। সেটিও বিশ্বকাপের ম্যাচে। ১৯৯৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করে সেই সময়ে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড (৩৯৮) গড়েছিল লঙ্কানরা। সে ম্যাচের শেষ ওভারে দুই হাতে বল করেছিলেন তিলকারত্নে।
অক্ষয় কার্নেওয়ার
শখের বশে নয়, ব্যাটসম্যানদের তাক লাগিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়মিত দুই হাতে বোলিং করতে দেখা গেছে ভারতের অক্ষয় কার্নেওয়ারকে। এ বছরের জানুয়ারিতে ভারতের ঘরোয়া প্রতিযোগিতা বিজয় হারারে ট্রফিতে অভিষেকেই সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন তিনি। দুই হাতেই সমান দক্ষতায় বোলিং করার বিরল নজির গড়েছেন এই স্পিনার। এখন পর্যন্ত সাতটি লিস্টে ম্যাচ খেলে ১৬টি উইকেট নিয়ে তিনিই তাঁর দলের সবচেয়ে সফল বোলার।