বার্লিনে কবুতর কমানোর চেষ্টা, এটি কতটা বাস্তবসম্মত?

জার্মানির রাজধানী বার্লিনের শহর কর্তৃপক্ষ কবুতরের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছে। কারণ, কবুতরের জন্য শহরে ময়লার পরিমাণ বাড়ছে। জার্মানির আরো অনেক শহর একই চেষ্টা করছে। তবে এখনো কবুতরের সংখ্যা কমাতে পুরো সফল, এমন কোনো উপায় খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কবুতরকে অনেকে উড়ন্ত ইঁদুর বলে ডাকেন, আর অন্যরা তাদের পোষা প্রাণী মনে করেন। জার্মানির বার্লিনে কয়েক লাখ কবুতর বাস করে। ডরিন রোটে ১৪ বছর ধরে শহরের কেন্দ্রে কবুতরদের খাওয়াচ্ছেন। এর ফলে কবুতরদের মানুষের কাছ থেকে দূরে রাখা সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
রোটে জানান,‘তারা শুধু শস্য খায়। আমরা যদি তাদের না খাওয়াই তাহলে তারা যেখানে লোকজন খাওয়া-দাওয়া করে সেখানে যাবে, বিশেষ করে রেস্টুরেন্টে ঢুকে যেতে পারে। কবুতর সারাক্ষণ মানুষের পায়ের মাঝে খাবার খোঁজে, যা অনেকে পছন্দ করেন না। এটা কবুতরের জন্যও ভালো নয়।’
আবর্জনা থেকে চিটচিটে খাবার খাওয়া পাখির হজমের জন্যও ভালো নয়। কবুতরেরা শহরের যেখানে ঘুরে বেড়ায়, সেখানে তাদের চিহ্ন রেখে যায়। কারণ, তারা প্রতি ১৫ থেকে ৩০ মিনিটে তারা মলত্যাগ করে।
লাইবনিৎস ইনস্টিটিউটের ড. অলিভার ক্রোনে বলেন, ‘কবুতরেরা হয়ত বিপজ্জনক নয়, কিন্তু তাদের মল যদি এভাবে জমা হতে থাকে তাহলে সেটা ভালো কথা নয়, কারণ, এর ভেতরে সালমোনেলার মতো কিছু ব্যাকটিরিয়া থাকতে পারে, যা মানুষ এবং অন্য প্রাণীর জন্য সমস্যার হতে পারে।’
শহরে কবুতরের সংখ্যা সীমিত করার কাজটি জটিল। একটি সমাধান হলো, প্রকাশ্য স্থানে কাঁটা বা জাল বসানো যেন তারা সেখানে জড়ো হতে না পারে।
ড. ক্রোনে বলেন, ‘এসব গৃহপালিত কবুতর নিয়ন্ত্রণ করা সহজ কাজ নয়৷ কারণ, আপনাকে সেই কবুতরগুলোকে হাত দিয়ে ধরতে হবে এবং তাদের প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে কারণে এটা প্রমাণিত যে, কবুতরের জন্য লফট বা বাসা তৈরি বেশি উপকারী হতে পারে।’
কবুতরের বাসা-যেখানে যাদু দেখা যায়। সেখানে পাখিরা একসঙ্গে খায় এবং বসবাস করে। ডরিন রোটে কবুতরের একটি বাসা পর্যবেক্ষণে সহায়তা করেন যেটি একটি স্টেশনের কাছে অবস্থিত। বার্লিনে এমন তিনটি বাসা আছে। আহত কবুতরকেও এখানে আনা হয়। তবে প্রথমে তাদের আলাদা খাঁচায় রাখা হয়। বাসাটি কবুতরদের জন্য শুধু একটি আরামদায়ক জায়গা নয়, যা তাদের রাস্তা থেকে দূরে রাখে।
কবুতর সারা বছর ধরে প্রতি কয়েক সপ্তাহে দুটি ডিম দেয়। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে স্বেচ্ছাসেবীরা আসল ডিম সরিয়ে সেখানে কৃত্রিম ডিম রেখে দেন।
এতে কি কাজ হচ্ছে? রোটে জানান, ‘আমরা এখন স্টেশনে আগের তুলনায় অনেক কম কবুতর দেখতে পাচ্ছি। এটি খুব স্পষ্ট, তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে লফটে ব্যবস্থা করা গেলে সংখ্যা হ্রাসের হার উল্লেখযোগ্য হবে।’ কিন্তু এটি কতটা বাস্তবসম্মত?
জার্মানির অনেক শহর কবুতরের সংখ্যা সীমিত করার বিভিন্ন পদ্ধতি পরীক্ষা করে দেখেছে। তবে কেউ এখনও নিখুঁত সমাধান খুঁজে পায়নি।