যে ১০ অভ্যাস পাকস্থলীর ক্ষতি করে

মানবদেহে পরিপাকতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাকস্থলী। এটি অন্ননালি ও ক্ষুদ্রান্ত্রের মধ্যে অবস্থিত। পাকস্থলী সাধারণত খাদ্য পরিপাকে একটি বড় ভূমিকা রাখে। তবে আমাদের দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস রয়েছে যেগুলো পাকস্থলীর ক্ষতির কারণ হতে পারে। পাকস্থলী ক্ষতি করে এমন ১০টি অভ্যাসের কথা জানিয়েছে লিস্ট টপটেন।
১. ধূমপান
ধূমপান পাকস্থলীর সমস্যা তৈরি করে। অধিকাংশ লোক বিষয়টি জানলেও অভ্যাসবশত এটিকে ছাড়তে পারে না। ধূমপান পাকস্থলীতে খুব খারাপ প্রভাব ফেলে। এটি পেপটিক আলসার তৈরি করতে পারে। এমনকি কখনো কখনো পাকস্থলীতে ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয় ধূমপান।
২. মদ্যপান
মদ্যপান পাকস্থলীর ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটি হজমে সমস্যা তৈরি করে। সামান্য পরিমাণ মদ্যপানও পেটে প্রদাহ তৈরি করতে পারে। এটি বমি, পেটে ব্যথা ও ডায়রিয়া তৈরি করতে পারে। এ ছাড়া এসিড রিফ্লাক্স এবং বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা তৈরি করে।
৩. বরফ খাওয়া
বরফ খাওয়া পাকস্থলীর সমস্যা করতে পারে। আমরা জানি, ধূমপান, মদ্যপান পাকস্থলীর ক্ষতি করে। তবে বরফ কামড়ে খাওয়ার অভ্যাসে দাঁত, গলা, জিহ্বা ও পকস্থলীর ক্ষতি হয়। যাদের বরফপানি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের পেটে গ্যাস, পাকস্থলীতে ব্যথা, পেট ফোলাভাবের সমস্যা হতে পারে।
৪. ব্যথানাশক ওষুধ
ব্যথানাশক ওষুধ পাকস্থলীর ক্ষতি করে। কিছু কিছু ব্যথানাশক ওষুধ আছে যেগুলো দীর্ঘদিন ধরে খেলে পাকস্থলীর ক্ষতি হয়। তাই ব্যথানাশক কম খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
৫. চকোলেট
অনেকে চকোলেট খেতে ভালোবাসেন। এটা শরীরে তেমন কোনো সমস্যা না করলেও এসিড রিফ্লাক্স তৈরি করতে পারে। এসিড রিফ্লাক্স হলে বুকে জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়। চকোলেটের মধ্যে থাকা উচ্চ পরিমাণ কোকো, চর্বি এবং ক্যাফেইন এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা তৈরি করে। এর কারণে কখনো কখনো পেট ফোলাভাব হয় এবং এটি হজমেও সমস্যা করতে পারে।
৬. সাইট্রাস খাবার
আপনি কী জানেন কিছু সাইট্রাস খাবার রয়েছে যেগুলো এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা তৈরি করে? যেমন : লেবু, কমলা, টমেটো ইত্যাদি। টমেটো আছে এমন সালাদেও এই সমস্যা হতে পারে। এগুলো হজমেও সমস্যা করে। এই খাবারগুলো খেতে চাইলে অবশ্যই ভরা পেটে খান।
৭. ঝাল জাতীয় খাবার
কিছু লোক আছে যারা ঝাল খাবার খেতে পছন্দ করে। তবে বেশি ঝাল জাতীয় খাবার বুক জ্বালাপোড়া, হজমে সমস্যা এবং পকস্থলীর সমস্যা তৈরি করে। লাল মরিচ বা সবুজ মরিচ অনেকেই খাবারে ব্যবহার করে।এই খাবার পাকস্থলীর মিউকোসাল লাইনে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এর ফলে গ্যাসট্রিটস, এসিড রিফ্লাক্স, গ্যাসট্রিক আলসারের মতো সমস্যা হয়।
৮. কফি
অনেকেই আছে যারা কফি ছাড়া বাঁচতেই পারে না। একে অনেকেই তার বন্ধু হিসেবেই ভাবে। তবে এই কফি পাকস্থলীর জন্য ক্ষতি করতে পারে। কফির মধ্যে রয়েছে তেল এবং ক্যাফেইন। এটি বুক জ্বালাপোড়া, আলসার, ইরিটেবল বাউল সিনড্রম, গ্যাসট্রিটের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৯. ফাস্ট ফুড
উচ্চ চর্বি এবং ভাজা খাবার পাকস্থলীর ক্ষতি করে, বুক জ্বালাপোড়া এবং এসিড রিফ্লাক্সের কারণ হয়। ভাজা খাবার হজম হওয়া কঠিন তাই পাকস্থলীর ওপর চাপ পড়ে। এদের বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা হয়।
১০. সফট ড্রিংক
এতে সন্দেহ নেই যে সফট ড্রিংক খুব মজাদার খাবার। তবে এর মধ্যে কোনো পুষ্টিগুণ নেই। এটি কেবল পাকস্থলীর সমস্যা তৈরি করে। হাড় দুর্বল করে দেয়, ওজন বাড়ায়, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই পাকস্থলীর সুরক্ষায় সফট ড্রিংক এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।