কনার বিচ্ছেদ : ন্যান্সির ব্যঙ্গ, আর প্রভার নিরব মানবিকতা

হঠাৎ করেই ভক্তদের হৃদয়ে দুঃসংবাদ হয়ে হাজির হলেন দেশের জনপ্রিয় গায়িকা দিলশাদ নাহার কনা। ছয় বছরের বৈবাহিক জীবনের ইতি টেনে নিজের বিচ্ছেদের কথা জানালেন ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক আবেগভরা বার্তায়। লিখলেন, আমি আপনাদের ভালোবাসার কনা। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে—সবই আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে।
এই বাক্যেই যেন ধরা ছিল তার যন্ত্রণা, আত্মসমর্পণ আর অপার এক শূন্যতা।
কনার এই স্ট্যাটাসের ঠিক এক ঘণ্টা পর, রাত ১২টার দিকে সামাজিক মাধ্যম গরম হয়ে ওঠে আরেকটি পোস্টে। সেখানে আরেক জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি লেখেন, জন্ম মৃত্যু বিয়ে বিচ্ছেদ, এর সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়—বাণীতে শেয়াল রানী।
সেই এক বাক্যেই নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয় তোলপাড়। কনার স্ট্যাটাসের সঙ্গে শব্দ মিল এবং “শেয়াল রানী” ট্যাগ—সব মিলিয়ে অনেকেই ধরে নেন, এটি কনাকে উদ্দেশ করেই লেখা। বিতর্ক আরও তীব্র হয় যখন পুরনো প্রেক্ষাপট সামনে আসে—গত বছর ন্যান্সির দেওয়া একটি শেয়ালের ছবিসংবলিত পোস্ট, যা নিয়েও তখন কনাকে ঘিরে ইঙ্গিত ছিল বলে গুঞ্জন।
যেখানে এক নারী তার জীবন ভেঙে যাওয়ার সংবাদে সবার সহমর্মিতা কামনা করছিলেন, সেখানে অন্য একজন নারীর এমন তির্যক মন্তব্য দেখে অনেকেই হতাশ হন। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক অন্যরকম আবেগ ছড়িয়ে দেন অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন), নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রভা লেখেন, শত্রুপক্ষের দুঃখের দিনেও আনন্দ হচ্ছে না, বরং মায়া লাগছে। কি করব, আমি মানুষ তো! মেয়ে মানুষ, নারী হয়ে নারীর দুঃখের দিনে নারীকেই অসম্মান করার পারিবারিক শিক্ষা, যোগ্যতা কোনটাই আমার নাই।
প্রভা কারও নাম নেননি। তবে তাঁর মর্মস্পর্শী ভাষায় যেন স্পষ্ট হয়ে যায়, এই শব্দগুলো ঠিক কোথা থেকে এসেছে। একজন নারীর দুঃখে আরেক নারী তাঁর পাশে না দাঁড়ালে—মানবিকতার জয় হয় না।
২০০০ সাল থেকে কনা গান গেয়ে আসছেন, ন্যান্সির অভিষেক ২০০৫-এ। দুজনই দেশের অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী। একই সময়কালের পথচলা, কিন্তু আজ তাঁদের অবস্থান যেন বিপরীত মেরুতে।আর মাঝখানে দাঁড়িয়ে প্রভা যেন উচ্চারণ করলেন এক নীরব সত্য—নারীর পাশে নারী না দাঁড়ালে, বাকি সব প্রতিভা ম্লান হয়ে যায়।