এই মাহজাবিনকে চেনেন? প্রযোজনার ২৫ বছর পার করেছেন তিনি

দেখতে দেখতে ক্যারিয়ারের ২৫ বছর পার করে দিলেন ‘হাফ স্টপ ডাউন’ এর কর্ণধার মাহজাবিন রেজা চৌধুরী। বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি সিনেমা প্রযোজনা করে কুড়িয়েছেন ব্যাপক প্রশংসা। সফল প্রযোজক হিসেবে তাকে সবাই এক নামেই চেনেন। ঈদ উপলক্ষে এবার মুক্তি পেয়েছে তার প্রযোজিত ওয়েব সিরিজ ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। প্রযোজনার পাশাপাশি এতে তিনি অভিনয়ও করেছেন।
মাহজাবিন রেজা চৌধুরী তাঁর শুরু গল্প বলছিলেন এভাবে, আমার এখনও মনে পড়ে শুরুর সেই সময়টা। অথচ কীভাবে যেন ২৫ বছর পার হয়ে গেল। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে কাজ করে যাচ্ছি, সবার ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছি; এর জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ সিরিজটি প্রসঙ্গে মাহজাবিন রেজা চৌধুরী বলেন, এখন টেলিভিশন খুললেই মারামারি, টেনশন, অনেক ধরনের গল্প দেখি। আমার কাছে মনে হয়েছে যে একটু হাসি পায়, এরকম কোনো প্রজেক্ট করতে পারলে আরাম পেতাম। সেই চিন্তা থেকেই এই প্রজেক্টটা করতে আগ্রহ হয়েছি।
যোগ করে তিনি আরও বলেন, বোহেমিয়ান ঘোড়া প্রজেক্টটা নিয়ে বেশ অনেক বছর আগে অমিতাভ (অমিতাভ রেজা চৌধুরী) ভাইয়ের সঙ্গে বসা হয়। আমাদের অনেকগুলো গল্পের মধ্যে এটা একটা ছিল। এটাকে প্রথম দিকে সিনেমা করার কথা ছিল। এরপর হইচই-তে আমরা অন্য একটি গল্প বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা এই গল্পটি পছন্দ করেন। অমিতাভ ভাইয়ের মজার জনরা হলো কমিক, কিন্তু হাসির, মজার গল্প নিয়ে কখনো কাজ করেনা। উনার সব সময় কোনো না কোনো গল্প সিরিয়াস, পলিটিক্যাল অথবা ড্রামা টাইপের প্রজেক্টই করা হয়। সেদিক থেকে এই বোহেমিয়ান ঘোড়া প্রজেক্টটা ফুল অন মাস্তি, ফুল অন কমেডি। কিন্তু এই পুরোটার মধ্যে একটা অদ্ভুত রকমের গল্প আছে। এখানে আসলে সম্পর্ক নিয়ে গল্পটা বলা হয় এবং একটা মানুষের কি রকম ভ্যালু থাকে? সেটা নিয়েই আসলে এই সিরিজ। সিরিজটি দেখলে খুব ইন্টারেস্টিং মনে হবে।

সিরিজটিতে অভিনয় প্রসঙ্গে মাহজাবিন বলেন, আমি তো অভিনয় করিনা, এখানে ছোট একটা চরিত্রে অভিনয় করেছি। কেমন করেছি জানি না, তবে যেদিন আমার দৃশ্যের অংশের শুট করি সেদিন আমার খুবই কাছের একটা ছোট ভাই মারা যায়। সেদিন আমি পুরো ভেঙে পড়েছিলাম, শুটিং করার মতো অবস্থায় ছিলাম না। অমিতাভ ভাই শুটিং ক্যানসেল করতে চেয়েছিলেন কিন্তু আমি না করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, দ্য শো মাস্ট গো অন। আমি কাজটা করেছি। এই কাজটা আমার কাছে বিশেষ হয়ে থাকবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপট প্রযোজকদের জন্য প্রযোজনা বেশ চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে ‘নোনা জলের কাব্য’, ‘আয়নাবাজি’, ‘রিকশা গার্ল’ এর এই প্রযোজক বলেন, প্রযোজনা করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জের। বিজ্ঞাপনে কাজ করে আসছি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে, সঙ্গে সিনেমাও করছি। দুইটা একদমই আলাদা ইন্ডাস্ট্রি৷ বিজ্ঞাপন করি অল্প স্বল্প সময়ের জন্য। এটাতে চ্যালেঞ্জ যেমন আছে তেমনি কমফোর্ট জোনটাও থাকে। কিন্তু সিনেমার ক্ষেত্রে অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। সিনেমাতে অনেক বিষয় থাকে।
যোগ করে তিনি আরও বলেন, একজন প্রযোজকের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সময় এবং বাজেটের মধ্যে প্রজেক্টটা শেষ করা। সেটা নাটক হোক, ওটিটি কিংবা সিনেমা যাই বলি না কেন, প্রজেক্টটা ঠিক সময়ে শেষ করতে হবে। এখন যদি সদ্য মুক্তি পাওয়া বোহেমিয়ান ঘোড়া নিয়ে বলি, এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল।সবকিছুকে একপাশে রেখে একই প্লাটফর্মে, একই টাইমলাইনে এনে প্রোডাক্টটা ডেলিভারি করতে পারা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। এই প্রজেক্টটা আমার জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জিং ছিল।