জাতীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়া সমর্থন করেন না হেমা মালিনী

ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে ভারতের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের লাগাতার জাতীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার যে ধারা চলছে, সেই ধারা সঠিক নয় বলে জানিয়ে দিলেন অভিনেত্রী হেমা মালিনী। বলিউডের একসময়কার গ্ল্যামার কুইন হেমা বলেছেন, ‘আজ পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার তালিকায় অনেকেই নাম লেখাচ্ছেন। অথচ আজ যাঁরা পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে এমন অনেকেরই নাম আছে, যাঁরা একসময় পুরস্কার পাওয়ার জন্য আমার কাছে এসে সাহায্য চেয়েছিলেন। এখন তাঁরাই পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়ে সরকারকে অপমান করছেন।’
হেমা আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়াটা প্রতিবাদের সঠিক পদ্ধতি নয়। আমার ধারণা, পুরস্কার ফেরানোর এই পুরো ঘটনার পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। কারণ, জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার জন্য মানুষ মরিয়া হয়ে ওঠে। যাঁরা আজ পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের মনে রাখা উচিত, এটা একটা জাতীয় সম্মান।’
তবে ভারতজুড়ে জাতীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার কার্যত হিড়িক তৈরি হলেও সেই পথে হাঁটতে কিন্তু রাজি নন অনেকেই। বিশেষ করে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়া আর না দেওয়ার মধ্যে দ্বিধাবিভক্তের রেখা বেশ স্পষ্ট।
বলিউডের অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বর্তমানে ভারতে নানা অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বা নিতে শুরু করেছেন। সেখানে দাঁড়িয়ে বলিউডের অভিনেতা অনুপম খের, অভিনেতা অনিল কাপুর কিংবা পরিচালক মধুর ভান্ডারকররা সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী অবস্থান নিয়েছেন।
তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত তাঁরা পুরস্কার ফিরিয়ে দেবেন না। অনুপম, অনিল, মধুরদের পথ ধরে অভিনেত্রী বিদ্যা বালানও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনিও পুরস্কার ফেরানোর পথে হাঁটবেন না।
অন্যদিকে, অভিনেতা কমল হাসানের মতে, পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার থেকেও প্রতিবাদ আরো মেধাবী হওয়াটাই বেশি প্রয়োজন। এদিকে বলিউডের পাশাপাশি টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা তথা দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুরস্কার তিনি ফিরিয়ে দিতেই পারেন, তবে এসব পুরস্কারের মূল্যই তাঁর কাছে নেই। তাই পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়া-না দেওয়ার দৌড়ে আপাতত নাম লেখাতে রাজি নন তিনিও।