চিত্রনাট্যকার ফারুক হোসেনের জন্য দোয়া চাইলেন বন্ধুরা

আজ ২৪ জুলাই, শুক্রবার বাদ জুমা নিখোঁজ নাট্যকার ফারুক হোসেনের স্মরণে ইনানি সমুদ্রসৈকত এলাকার একটি মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ওই মিলাদ মাহফিলে যোগ দিতে এরই মধ্যে ফারুকের বন্ধু অভিনেতা এবং প্রযোজক আরশাদ আদনান কক্সবাজার গেছেন।
কক্সবাজার থেকে আরশাদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা এখনো আশা করি, ফারুককে পাওয়া যাবে। আশপাশের সব থানায় আমাদের লোক সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছে, যাতে কোনো মরদেহ তীরে এলেই আমরা খবর পাই। তার স্মরণে আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে আজকের এই মিলাদ। সারা দেশের মানুষের কাছে আমরা দোয়া চাই, ফারুক যেখানেই আছে যেন ভালো থাকে।’
গত ১৯ জুলাই কক্সবাজারের ইনানি সমুদ্রসৈকত থেকে নিখোঁজ হন ফারুক। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি সাগরপাড়ের চোরাবালিতে পড়েছিলেন। ওই দিন বিকেল থেকেই ফারুককে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু ঘটনার ছয় দিন পরও তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর কামাল উদ্দিন ভুঁইয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যদি কোথাও কোনো মরদেহ পাওয়া যায়, তাহলে আমাদের কাছে খবর আসবে। চারদিকে আমাদের লোক লাগানো আছে। গতকাল পর্যন্ত আমাদের একটা হিসাব ছিল যে মরদেহটি হয়তো ভেসে আসবে। আসলে একটা মানুষ পানি খেয়ে যখন ভারী হয়ে যায়, তখন সে পানির নিচে চলে যায়। তাও খুব বেশি পানির নিচে যেতে পারে না। আবার দুদিন পর দেহের মাংস ফুলে গেলে লাশ ভেসে ওঠে। সমুদ্রের ঢেউ সেটাকে তীরে টেনে আনে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি, কিন্তু এখনো কোনো ফল পাইনি। আমাদের আসলে গভীর সমুদ্রে উদ্ধারকাজ চালানোর মতো লোকবল বা যন্ত্রপাতি নেই। মরদেহ ভেসে এলেই আমরা খবর পাব। গতকাল গভীর সমুদ্রে আমাদের টহল বন্ধ করেছি। তবে সমুদ্রসৈকতে আমাদের টহল চলবে।’
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবদুল মজিদ বলেন, ‘১৯ জুলাই রোববার বেলা ৩টার দিকে নিখোঁজ ফারুক হোসেন কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে পানিতে নামতে চাইলে সেখানকার কোস্টগার্ডের দায়িত্বে থাকা সদস্যরা তাঁদের সাগরে নামতে নিষেধ করেন। সে সময় ফারুক আশ্বস্ত করেন, তাঁরা পানিতে নামবেন না, শুধু সৈকতে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করবেন। এর কিছুক্ষণ পরই সমুদ্রপাড়ে ফারুকসহ দুজন চোরাবালিতে হারিয়ে যান বলে জানান গার্ডরা। চোরাবালিতে আটকে যাওয়া দুজনের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করতে পারলেও ফারুক হোসেনকে উদ্ধার করা যায়নি।’
দীর্ঘদিন ধরে ফারুক হোসেন নাটক লিখছেন। এই ঈদেও তাঁর লেখা একাধিক নাটক প্রচার হচ্ছে। এনটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে তাঁর লেখা ধারাবাহিক ‘একদিন ছুটি হবে’। নির্মলেন্দু গুণের উপন্যাস ‘কালো মেঘের ভেলা’ অবলম্বনে চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য করছিলেন ফারুক হোসেন। সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন কবিকন্যা মৃত্তিকা গুণ।
ফারুক হোসেন মূল ধারার চলচ্চিত্রে ‘সুলতানা বিবিয়ানা’, ‘পাষাণ’সহ বেশ কিছু চিত্রনাট্য লিখেছেন। এরই মধ্যে আরো কয়েকটি ছবির কাজ করার কথা ছিল তাঁর। ‘ওয়ারিশ’ ও ‘পুলিশগিরি’ নামে দুটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য প্রায় শেষ করে ফেলেছিলেন তিনি। ঈদের পরই এসব চলচ্চিত্রের কাজ শুরুর কথা ছিল। এ ছাড়া বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘আম্মাজান’ ও ‘ছুটির ঘণ্টা’র রিমেকের জন্য চিত্রনাট্য লেখার কাজও করছিলেন তিনি।