মিজান মিডিয়ার নামে প্রতারণা

চলচ্চিত্রের প্রতি মানুষের দুর্বলতা আজন্মের। প্রতিদিনই এফডিসির গেটে দাঁড়িয়ে থাকে অনেক মানুষ। কিছু মানুষ গেটে কিছু টাকা দিয়ে ভেতরে ঢোকে, কোনো গাড়ি গেট দিয়ে যাওয়া-আসা করলে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আবার কিছু লোক ছবিতে অভিনয় করার জন্য বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলে টাকা দেয়। সত্যি এটাই যে, হাতে গোনা ভাগ্যবান কয়েকজন ছাড়া এদের সবাই শেষটায় প্রতারিত হয়। এই পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য রীতিমতো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান মিজান মিডিয়া, যাদের নামে প্রতারণার বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠান-প্রধান জানিয়েছেন, প্রতারণা করে ব্যবহার করা হচ্ছে তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম।
অনেককেই সিনেমায় কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিলেও কথামতো কাজ করে না তারা- এমনই অভিযোগ মিজান মিডিয়ার নামে। এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে মিজান মিডিয়ার নির্বাহী প্রধান মিজানুর রহমান বিস্তারিত আলাপে বললেন, বেআইনিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কোথাও কোনো শাখা নেই। আমি নিজেই এই প্রতিষ্ঠান চালাই। আমিও শুনেছি আমার নামে নাকি ফার্মগেটসহ আরো জায়গায় অফিস নিয়ে এই প্রতারণা করছে। আমি আগামী রোববার এই বিষয়ে তেজগাঁও থানায় জিডি করতে যাব। তবে যাঁরা চলচ্চিত্রে কাজ করতে চান, তাঁদের বলব আপনারা এই ভুল করবেন না। যাঁরা অভিনয়ের সুযোগ করে দেবে বলে, তাদের আশি ভাগ লোকই প্রতারণা করে। বাংলাদেশে আমিই একমাত্র লোক সাপ্লাই (সিনেমায়) দিই। আমার জানা মতে, আর কেউই নেই। এ ছাড়া সরাসরি যদি পরিচালকের সাথে কেউ যোগাযোগ করতে পারে তাহলে কেউই প্রতারণার শিকার হবে না।’
এই পেশায় কীভাবে যুক্ত হওয়া? এই প্রশ্নের জবাবে ফিরে গেলেন বহু পেছনের সময়ে, “আমি ছোটবেলায় খুব ছবি দেখতাম। যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, তখন প্রায় প্রতিদিন চাঁদপুর থেকে লঞ্চে করে ঢাকায় এসে এফডিসির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম। কিছুক্ষণ পরে লাঠি দিয়ে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। একদিন দেখলাম, আমরা যারা গেটে দাঁড়িয়ে আছি, তাদের সবাইকে ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে। এত বড় সুযোগ পেয়ে সবার সাথে ভেতরে গেলাম। আমাকে একটি রাজকীয় ড্রেস পরিয়ে রাজবাড়ির গেটে দাঁড় করিয়ে দিল। জানলাম, এটা নায়ক মাহমুদ কলি আর নায়িকা অঞ্জু ঘোষের ‘বিবাদ’ ছবির শুটিং। সেখানেই পরিচয় হয় জাহাঙ্গীর ভাইয়ের সাথে। তিনি এফডিসিতে লোক সাপ্লাই দেন। খাওয়া দেন আর সাথে ১০ টাকা। আমার আর বাড়ি ফিরতে ইচ্ছা করে না। ‘মহুয়া সুন্দরী’, ‘ধর্ম আমার মা’-এর মতো অনেক ছবিতে কাজ করলাম। আমাকে দেখে উনি পছন্দ করে ফেললেন, বললেন, ‘তুই আমার সাথে থাক।’ এটা ৮১ সালের ঘটনা। এর পর থেকেই এই কাজের মধ্যে আছি।’
‘পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের ‘স্বজন’, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে এককভাবে লোক সাপ্লাইয়ের কাজ শুরু করি ১৯৯১ সাল থেকে। আজ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার ছবিতে লোক সাপ্লাই দিয়েছি। একই কাজ এখনো করছি। পাশাপাশি শুটিংয়ের যত মাল লাগে, তার সবই আমার কাছে আছে। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন এই কাজই করতে চাই।”