প্রথম ছবিতেই ইমুর নায়ক শাকিব

‘শত শত ছবির নায়িকা হওয়ার ইচ্ছা আমার নেই। আমি এমন ছবির নায়িকা হতে চাই, যে ছবি আমি মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে দেখতে পারব। বিয়ে করার পরও যেন সেসব ছবি আমার স্বামী-সন্তান নিয়ে দেখতে পারি, এমন ছবিতেই কাজ করতে চাই। কলকাতায় এখন অনেক ভালো ছবি হচ্ছে। তারা ছোট ছোট পোশাকও পরছে, কিন্তু অশ্লীলভাবে নিজেদের উপস্থাপন করছে না। আমার মনে হয়, সব দিকে খেয়াল রেখে ছবি বানালে দর্শক দেখবে।’ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও নিজের লক্ষ্য নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন নবাগত নায়িকা আলভিরা ইমু। তিনি ‘জানে মন তুই জীবন’ নামে একটি ছবিতে নায়ক শাকিব খানের বিপরীতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
সন্ধানী কথাচিত্রের ব্যানারে ছবিটি পরিচালনা করবেন শাহ আলম মণ্ডল। এরই মধ্যে ছবিটির মহরত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে রোজার ঈদের পর পরই শুরু হবে ছবির শুটিং।
বাংলাদেশের ছবিতে নিজের আত্মপ্রকাশ নিয়ে আলভিরা ইমু বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছা। আমার উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি, তাই স্কুলে থাকতেই র্যাম্প মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম। এ জন্য বাবা মেরেছিলেন। আবার এখন বাবাই বলছেন, নিজেরটা বোঝার বয়স আমার হয়েছে। এখন আমি চাইলে কাজ করতে পারি।’
তাহলে পারিবারিকভাবে অভিনয়ের সবুজসংকেত পেয়ে গেছেন ইমু? জবাবে তিনি বলেন, ‘ছবিতে অভিনয় করব, বিষয়টি যখন পারিবারিকভাবে আলোচনা হচ্ছিল, তখন আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু সন্ধানী কথাচিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল ফেসবুকে আমার ছবি দেখে আমাকে পছন্দ করেন। এবং বাসায় এসে আমার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন।’
নিজের উৎসাহের উৎস সম্পর্কে ইমু বলেন, ‘আমার ছোটবোন আর আমার ভাবি আমাকে সব সময় উৎসাহ দেয়। আসলে তাদের আগ্রহ আমাকে চলচ্চিত্রে কাজ করতে সাহস জুগিয়েছে।’
ছবিতে কাজ করা প্রসঙ্গে ইমু বলেন, ‘যে ধরনের ছবি বাংলাদেশের মানুষ দেখে, আমরা যে ধরনের ছবি দেখে বড় হয়েছি, যে ধরনের ছবি বাসার সবাইকে নিয়ে দেখা যায়, সে ধরনের ছবিতে কাজ করতে চাই। ভারতে ছবির কাটতি বাড়াতে তারা অনেক গসিপ তৈরি করে। আর আমাদের বাংলাদেশে এ ধরনের গসিপ একজন তারকাকে মাটিতে নামিয়ে দেয়। বাংলাদেশের দর্শক ভারতের ছবিতে যা দেখতে চায়, বাংলাদেশের ছবিতে তা দেখতে চায় না। আমাদের ছবি হবে আমাদের মতো।’
বাংলাদেশের ছবি কী পরিমাণ দেখেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে ইমু বলেন, ‘ছোটবেলায় দেখতাম। দীর্ঘদিন আমেরিকায় থেকেছি, তাই গত পাঁচ বছর সেভাবে ছবি দেখা হয়নি। আট মাস ধরে দেশে আছি এবং ছবি দেখছি।’
বাংলাদেশের ছবি সমস্যা প্রসঙ্গে ইমু বলেন, ‘বাংলাদেশে ছবির গান ভালো হয়। ভারতেও আমাদের গান অনেক জনপ্রিয়। নাচের দিক দিয়ে আমরা একটু পিছিয়ে আছি বলে আমার মনে হয়। অভিনয়শিল্পীদের অভিনয় ভালো হতে হবে। অনেক নতুন শিল্পী আছেন, কিন্তু তাঁদের অভিনয় তেমন ভালো নয়। গল্পের বেলায় বলব, বাংলাদেশে মৌলিক গল্প কম। আমাদের নিজেদের গল্প ও ছবি দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে হবে। সেখানে আমরা যদি নকল ছবি বানাই, তাহলে হাসির খোরাক হতে হবে।’
বাংলা চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইমু মন্তব্য করেন, ‘কয়েক বছর আগেও কলকাতার ছবি আমাদের অনেক পেছনে ছিল। এখন তারা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। এর মূল কারণ আমাদের চলচ্চিত্রকে আমরা সমৃদ্ধ করছি না।’
নিজের প্রথম ছবি প্রসঙ্গে আলভিরা ইমু বলেন, ‘ছবিটিতে আমাকে দেখা যাবে ধনী পরিবারের চঞ্চল এক মেয়ের চরিত্রে। আমি দেশের বাইরে থাকি। আর সেখানে নায়ক ব্যবসা করার জন্য যায়। সেখানে গিয়ে দেখা হয় আমার সঙ্গে। তার পর সে আমাকে পছন্দ করে। এভাবেই এগিয়ে যায় ছবির গল্প। এটা আমার প্রথম চলচ্চিত্র। তাই নিজের সবটুকু মেধা উজাড় করেই কাজটা শেষ করতে চাই।’
নতুন ছবি প্রসঙ্গে শাহ আলম মণ্ডল বলেন, ‘শাকিব ও ইমু ছাড়া আরো কয়েকজন শিল্পী চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ৭ জুন ভারতে যাব কিছু কাজে; ফিরব ১৫ জুন। ভারত থেকে এসেই ছবিটি সম্পর্কে বিস্তারিত বলব। তবে এটুকু বলতে পারি, একটা চমক আছে সবার জন্য।’ মণ্ডলের এই ছবিতে শাকিব ও ইমু ছাড়াও অভিনয় করবেন আলমগীর ও দিতি।