স্বাস্থ্যখাতের সংস্কারে বরিশালে দুই স্থানে অবরোধ, আমরণ অনশন

বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালসহ দেশের স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের তিন দফা দাবিতে নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশাপাশি সদর রোডেও ব্লকেড করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে পৃথক স্থানে অবরোধ শুরু করেছে ছাত্রজনতা।
এতে দুই সড়কেই যানবাহন আটকে যাত্রী দুর্ভোগ হচ্ছে। তবে পুলিশি সহায়তায় ভিন্ন পথ দিয়ে অধিকাংশ যানবাহনকে গন্তব্যে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে শেবাচিম হাসপাতাল সংস্কারে সাত দফা দাবিতে প্রধান গেইটে সোমবার বেলা ১১টা থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে কয়েকছাত্র।
এর আগে টানা আন্দোলনের ১৬তম দিন সোমবার পঞ্চম দিনের মত সাড়ে ৪ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ শেষে সংবাদ সম্মেলন করে লাগাতার বরিশাল ব্লকেড কর্মসূচির এই ঘোষণা দেন সংগঠক মহিউদ্দিন রনি। তিনি বলেন, সারাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে অব্যবস্থাপনা, রোগীদের হয়রানি ও স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট ভাঙার তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।
মহিউদ্দিন রনি বলেন, সবশেষ রোববার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছিলাম বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে সশরীরে আসার জন্য। এসে অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত শেষে তিন দফা দাবির স্বপক্ষে সুস্পষ্ট আশ্বাস প্রদানের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু আল্টিমেটামের সময় শেষ হলেও তিনি বরিশাল আসেনি, তাই দাবি আদায়ে আমরা বরিশাল ব্লকেড করছি।
মহিউদ্দিন আরও বলেন, বরিশালবাসীর আর্তনাদ এখনো মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পৌঁছায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক এখনো নড়ে না। যদি শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ওপর দুর্নীতি, ভোগান্তি, অবহেলা চলতে থাকে, তাহলে এ আন্দোলন আরও কঠোর হবে।
এদিকে কুয়াকাটা থেকে আসা যানবাহনগুলো নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোডের চৌমাথা থেকে নবগ্রাম রোড দিয়ে কাশিপুর চৌমাথা দিকে ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। এতে যানবাহনগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে না থেকে বিকল্প পথে মহাসড়কে যুক্ত হয়ে গন্তব্যে চলে যায়। একই পথে ঢাকা থেকে কুয়াকাটাগামী গাড়িগুলো এই রুটে গন্তব্যে চলে যায়। এই পথে অতিরিক্ত ১০ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে হলেও ঘণ্টার ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে না। তবে অতিরিক্ত সময় ক্ষেপণসহ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছে। এদিকে অবরোধ চলাকালে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে আন্দোলনকারীরা ইমার্জেন্সি লেন তৈরি করা হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দাঁড়িয়ে ছিল।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন সিকদার বলেন, তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আজও মহাসড়কসহ সদর রোড অবরোধ করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ দিন ধরে তিন দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। এই দাবিতে সোমবার সাড়ে ৪ ঘণ্টা, রোববার সাড়ে ৫ ঘণ্টা, শনিবার ছাত্র-জনতা ও বাসশ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থানে গেলে ছাত্র-জনতা আড়াই ঘণ্টা ও বাস শ্রমিকরা দেড়ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে। এছাড়া শুক্রবার সাত ঘণ্টা, বৃহস্পতিবার আড়াই ঘণ্টা নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের সামনের মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতা।