পাবনায় ৪ আগস্ট শহীদ হন জাহিদ ও নিলয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উত্তাল সময়ের এক বিভীষিকাময় দিন ছিল ৪ আগস্ট ২০২৪। ওইদিন পাবনা শহরে ছাত্রদের এক শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গুলি চালানো হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের পক্ষ থেকে। প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘটিত ওই গুলিতে শহীদ হন পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র জাহিদ হোসেন এবং ছিদ্দিক মেমোরিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র নিলয় হোসেন। আহত হন আরও শতাধিক আন্দোলনকারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেদিন পাবনা শহরের এক প্রান্তে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। অপরপ্রান্তে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনকারীরা ছিলেন নিরস্ত্র, আর সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রে সুসজ্জিত ছিলেন। ঘটনার এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগনেতা আবু সাঈদ খানের নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সরাসরি ছাত্রদের সমাবেশে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দুই শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। পরবর্তীতে পাবনা সদর থানায় দুটি, ঈশ্বরদী ও চাটমোহরে আরও দুটিসহ মোট চারটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলায় ১০৩ জন এবং আরেকটিতে ৬৩ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের তালিকায় রয়েছেন- পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খান এবং সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্সও। কিন্তু ঘটনা এক বছর পার হলেও কোনো মামলারই চার্জশিট দেয়নি পুলিশ। এতে হতাশ ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শহীদ দুই পরিবারের সদস্যরা।
এ বিষয়ে পাবনার কোনো পুলিশ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে পুলিশ সুপার মো. মোরতাজ আলী খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চারটি মামলার অগ্রগতি হয়েছে এবং খুব শিগগিরই চার্জশিট দেওয়া হবে। গুলিতে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলোর বৈধতা যাচাই করা হয়েছে, সব অস্ত্রই লাইসেন্সধারী। অস্ত্রগুলো জব্দ করে ব্যালেস্টিক পরীক্ষাও সম্পন্ন করা হয়েছে।