সহকারী ডেন্টাল সার্জনে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা

একজন সহকারী ডেন্টাল সার্জনে চলছে উপকূলীয় জেলা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বস্থ্যসেবা। তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য একটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও এখানে রয়েছে চিকিৎসক সংকট।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, একজন সহকারী ডেন্টাল সার্জন দিয়ে চলছে সব চিকিৎসাসেবা। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে ডেঙ্গুসহ বেড়েছে উপকূলীয় মানুষের বিভিন্ন রোগ। রোগীদের সিবিসি, সিআরপি, এইচবিএসএজি, ডেঙ্গু ফর এনএস১সহ ১৫ ধরনের পরীক্ষা করার জন্য ল্যাব থাকলেও টেকনোলজিস্টের অভাবে পরীক্ষা করাতে পারছে না রোগীরা। এসব পরীক্ষা করার জন্য বাইরে ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে গিয়ে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুসারে, এ বছর জুন মাস পর্যন্ত বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ২৭ হাজার রোগী। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল প্রায় চার হাজার রোগী। প্রতিদিন গড়ে ১৮০ থেকে ২০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে এই হাসপাতাল থেকে।
বর্তমানে এখানে ৩১ চিকিৎসকের বিপরীতে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও একজন সহকারী ডেন্টাল সার্জনসহ কর্মরত রয়েছেন তিনজন চিকিৎসক। এই তিন চিকিৎসকের মধ্যে দুজন প্রশিক্ষণের জন্য রয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। বর্তমানে একজন সহকারী ডেন্টাল সার্জন দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা।
রাহাত আহমেদ নামের এক রোগী জানান, হাসপাতালে যেসব পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলোর মূল্য তালিকা লাগানো থাকলেও টেকনোলজিস্টের অভাবে বিভিন্ন রোগের নমুনা টেস্ট করতে পারছে না রোগীরা। ১০০ থেকে ১৫০ টাকার টেস্ট বাইরের করতে গেলে হাজার হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। উপকূলীয় মানুষ অভাব অনটনের মধ্যে জীবনযাপন করলেও তাদের পক্ষে এত টাকা দিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। জরুরি প্রয়োজনে অনেককে ধার-দেনা করে জোগাতে হচ্ছে এই টাকা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা আরও জানায়, সকাল থেকে ৩০০-৪০০ মানুষ চিকিৎসার জন্য এসেছে। কিন্তু একজন ডাক্তার দিয়ে এই রোগীদের চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। তাই আরও চিকিৎসকের দরকার। হাসপাতালে একজন মাত্র ডাক্তার থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসাসেবা না নিয়েই অনেককে চলে যেতে হচ্ছে।
কর্তব্যরত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী ডেন্টাল সার্জন মো. আল আমিন বলেন, এখানে ৩১ চিকিৎসকের বিপরীতে এত কম সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে সেবা প্রত্যাশীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দুজন চিকিৎসক ট্রেনিংয়ের জন্য বরিশালে রয়েছেন। বর্তমানে আমি একাই সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। একজন চিকিৎসক পদায়ন করা হয়েছে কিন্তু তিনি এখনও যোগদান করেননি।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। অতি দ্রুত তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে। চিকিৎসক পদায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।