কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস আজ

কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস আজ ৩ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া হানাদারমুক্ত হয়েছিল।
এ উপলক্ষে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কোটালীপাড়া হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে এ বছর হেমায়েত বাহিনী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। উপজেলার টুপুরিয়া গ্রামে নির্মিত হেমায়েত বাহিনী স্মৃতি জাদুঘর চত্বরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কাকডাঙ্গা রাজাকার ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা হামলা চালিয়ে ক্যাম্পটি দখল করে নেন। রাজাকার ক্যাম্পের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। আর এই দিন সর্বপ্রথম গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
এ সময় কোটালীপাড়া উপজেলায় বয়ে গিয়েছিল আনন্দের বন্যা। অনেক দুঃখ-বেদনার পরও সেদিন এলাকার মানুষের মধ্যে ছিল আনন্দ আর উল্লাস। কোটালীপাড়াবাসী পেয়েছিল মুক্তির স্বাদ।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মুজিবুল হক বলেন, ‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শুধু যৌথ বাহিনীই দেশমাতৃকার মুক্তিযুদ্ধ করেনি। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে এ দেশ থেকে বিতাড়িত করতে এ দেশে কয়েকটি অঞ্চলে গঠিত হয়েছিল কয়েকটি বাহিনী। ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছিল হেমায়েত বাহিনী। আমরা এই হেমায়েত বাহিনীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’
কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সামসুল হক বলেন, ৭২টি গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত এই হেমায়েত বাহিনী যুদ্ধ করেছিল মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় সাত হাজার। তার মধ্য থেকে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ২৪ জন আহত ও ১৮ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন—কোটালীপাড়া উপজেলার গোলাম আলী, বেলায়েত, আবু তালেব, আবুল খায়ের, মোক্তার হোসেন, রতন কুমার, মোয়াজ্জেম হোসেন, টুঙ্গীপাড়া উপজেলার বেলায়েত হোসেন, মুকসুদপুর উপজেলার আবুল বাশার, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ছাত্তার মৃধা, সেকেন্দার, নুরু বেপারী, পরিমল শীল, আগৈলঝাড়া উপজেলার তৈয়াবালী, নলছিটি উপজেলার ওসমান, মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার মকবুল হোসেন, আ. ছাত্তার ও ঢাকার ইব্রাহিম।