সরকার আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে : খালেদা জিয়া

সরকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি সরকারের এ ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এ পথ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহপল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আবারও তাঁকে আটক করায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে আজ বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেন, বিনা ভোটের সরকার তাদের অনৈতিক ক্ষমতাকে সংহত করতে সারা দেশে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর যে অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাচ্ছে- তা বর্ণনাতীত।
সরকার দেশের আইন কানুন ও বিচারিক রায়কে পর্যন্ত অশ্রদ্ধা করছে উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও অনেক ক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনেক রাজনৈতিক বন্দীকে সময়মতো মুক্তি না দিয়ে নানা টালবাহানায় তাঁদের আটকে রাখছে।
‘এরপরও কেউ জামিন নিয়ে মুক্তিলাভ করলেও কারাফটক থেকে নিত্য-নতুন সাজানো মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুনরায় আটক করে তাঁদের জেলে পুরছে। সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ ধরনের তৎপরতা দেশের আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন ছাড়া আর কিছুই নয়। সরকারের এ ধরনের আচরণ মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার হরণের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’
খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, দলকে যখন তৃণমূল পর্যায় থেকে পুনর্গঠনের মতো সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে এগোচ্ছি, তখন সরকার দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের নিত্য-নতুন মিথ্যা মামলায় আটক করছে, পুরনো মিথ্যা মামলায় চার্জ গঠন করে চার্জশিট প্রদান করছে। এর মূল লক্ষ্য হলো- বিরোধী দলকে কোনোভাবেই সাংগঠনিক কাজ করতে না দেওয়া।
‘সরকার যে ভয়াবহ ইমেজ সংকটে নিপতিত- তাতে সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণ তাদের ক্রমেই আরো জনবিচ্ছিন্ন করে তুলছে। সরকার এ সত্যটি যত দ্রুত অনুধাবন করতে সক্ষম হবে এবং সে অনুযায়ী একটি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে সব দলের অংশগ্রহণে এবং তা অবশ্যই সবার দাবি অনুযায়ী একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে- তাতেই তাদের মঙ্গল।’
বিএনপি চেয়ারপারসন হিংসা-বিদ্বেষের পথ ছেড়ে একটি টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য আগের মতো একসঙ্গে কাজ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘জনগণের রায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা-আস্থা আছে। আপনাদের ভয় কিসে?’
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘হিংসাশ্রয়ী রাজনীতি দেশের মৃতপ্রায় গণতন্ত্রকে কফিনে পুরে ফেলবে একদিন। সরকার যেন সেই কাজটি করতেই বেশি তৎপর হয়ে উঠেছে।’