ময়মনসিংহ শহরে কয়েক কোটি টাকার জমি, তিন পক্ষের মালিকানা দাবি

ময়মনসিংহ শহরের সি কে ঘোষ রোডের কয়েক কোটি টাকা দামের জমি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে চলছে মালিকানার টানাটানি। অন্যদিকে উচ্চ আদালতের রায় পেয়ে একই জমির মালিকানার দাবিতে অনড় ব্যবসায়ী গোলাম আম্বিয়া হারুন। প্রায় ২৩ শতাংশ জমিটির দাম সরকারি হিসাবে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
জমির মালিকানা নিজেদের দাবি করে গত ১ নভেম্বর সেখানে ৪০টি পাকা দোকান নির্মাণ শুরু করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন। কাজ শুরুর তিন দিনের মাথায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন বলছে, বিগত বিআরএস রেকর্ড জরিপ অনুযায়ী জমির মালিক জেলা প্রশাসন তথা সরকারের। এ জমিতে সব স্বত্ব সরকারের।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে প্রথম পাকা দোকান নির্মাণ শুরু করে সিটি করপোরেশন। সে বছর মার্চ মাসে পত্র পত্রিকায় এ বিষয়ে খবর প্রকাশ হলে দোকান নির্মাণ বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। ফলে নির্মাণাধীন দোকানের জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া অগ্রিম টাকা নিয়ে বিপাকে পড়ে সিটি করপোরেশন। দুই বছর আগে অগ্রিম টাকা দিয়েও দোকান বুঝে না পাওয়ায় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের বাধার ফলে দোকান নির্মাণ বন্ধ হওয়ায় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া বা দোকান বরাদ্দ কোনোটাই করতে পারছে না সিটি করপোরেশন।
অন্যদিকে ওই জমি পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া মালিকানার দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে ২৮ বছরের আইনি লড়াইয়ে একাধিকবার উচ্চ আদালতে রায় পেয়েছেন ব্যবসায়ী গোলাম আম্বিয়া হারুন। উচ্চ আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে করা মামলায় ২০১৯ সালেও নিজের পক্ষে রায় পেয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, প্রায় ২৩ শতাংশ (০.২৩৮৫) ভূমি সিএস খতিয়ান নম্বর ১০৭২, দাগ নম্বর- ১০৭৫ পৈত্রিক হেবা দলিলমূলে তিনি মালিক। তার অগোচরে আরওআর জরিপ রেকর্ডের সময় ভুলে জমিটি জেলা প্রশাসেকর (সরকার) ১ নম্বর খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর ওই জমি খাস খতিয়ানমুক্ত করতে করা সব মামলায় সরকার হেরেছে, আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, মালিকানা বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান আছে। মামলার রায়ে যা হবে সেটা তাঁরা মেনে নেবেন।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দাবি করেছেন, গোলাম আম্বিয়া হারুনের মামলার রায়ের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের করা আপিল মামলা উচ্চ আদালতে চলমান রয়েছে। জমির মালিক সরকার। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নয়। জমিটি সরকারের তাই আমরা সেখানে মালিকানার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেব।