মেহেরপুরের মাটিতে শোভা পাচ্ছে জাপানের মিয়াজাকি আম

মেহেরপুরের উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়া এবার নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। বিশ্বের অন্যতম দামি ফল ‘মিয়াজাকি’ আম চাষ করে ব্যতিক্রমী সফলতার মুখ দেখেছেন সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের যুবক মির্জা গালিব। মাত্র ২ বিঘা জমিতে ৭৭টি আমগাছ রোপণ করে তিনি পেয়েছেন আশানুরূপ ফলন। এই সফলতা মেহেরপুরসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে নতুন আগ্রহ সৃষ্টি করছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মিয়াজাকি আমের আদি উৎপত্তি জাপানের কিউশু দ্বীপের মিয়াজাকি অঞ্চলে। সেখানকার উষ্ণ জলবায়ু, পর্যাপ্ত সূর্যালোক এবং সুনির্দিষ্ট আবহাওয়া এই আম চাষের জন্য উপযোগী। চামড়ার লালচে আভা, অতিরিক্ত মিষ্টতা ও পুষ্টিগুণের কারণে ‘সূর্যের ডিম’ নামে পরিচিত এই আম বিশ্বের বিলাসবহুল ফলের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
আমচাষী মির্জা গালিব বলেন, ইউটিউব ও ইন্টারনেটে মিয়াজাকি আম সম্পর্কে জানতে পারি। আড়াই বছর আগে বিভিন্ন উৎস থেকে চারা এনে ২ বিঘা জমিতে ৭৭টি গাছ লাগাই। এবারই প্রথম ভালো ফলন পেয়েছি। গাছের পরিচর্যা এবং যত্নে খরচ ও শ্রম বেশি হলেও ফল দেখে মনে হচ্ছে পরিশ্রম সার্থক হবে।
তিনি আরও বলেন, এবার প্রায় ৩ মণ আম উৎপাদন হতে পারে। আগামী মৌসুমে আরও বড় পরিসরে বাগান সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, মিয়াজাকি আম চাষে আগ্রহী কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুল আলম বলেন, ১৯৮০ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে জাপানে মিয়াজাকি আম চাষ শুরু হয়। পরবর্তীতে ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনসহ কয়েকটি দেশে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়। তবে ফলন পেতে সময় লাগে এবং এর জন্য বিশেষ পরিচর্যা, পর্যাপ্ত সূর্যালোক, নিয়মিত সেচ এবং অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, মেহেরপুর খরাপ্রবণ এলাকা। এখানে বন্যার ঝুঁকি নেই। তাই এই অঞ্চলের মাটি নানা জাতের ফল ও ফসল চাষের জন্য অনুকূল। যদি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মিয়াজাকি আম বাজারজাত ও রপ্তানি করা যায়, তবে এটি দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।