ভৈরবে এইডসবিষয়ক সচেতনতামূলক সভা

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এইচআইভি/ এইডস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলরুমে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওই সভার আয়োজন করে।
সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংস্থার ভৈরব সাব ডিআইসির ইনচার্জ মো. শরীফুল ইসলাম। প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘এইডস একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়। তাই এইডস আক্রান্ত হওয়ার আগে এইডস প্রতিরোধে আমাদের সচেতন হতে হবে।’
ডা. বুলবুল আহমেদ আরো বলেন, ‘অধিকাংশ এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি অনেকদিন পর্যন্ত লক্ষণহীন অবস্থায় থাকেন। এমনকি জানতেও পারেন না যে তাঁরা এইচআইভিতে আক্রান্ত। লক্ষণহীন এসব ব্যক্তি এইচআইভি ছড়াতে পারেন। একমাত্র রক্ত পরীক্ষা ছাড়া কোনো ব্যক্তির দেহে এই ভাইরাস আছে কিনা, তা জানার উপায় নেই।’
এইডস যেহেতু আক্রান্তের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়, তাই অন্যান্য রোগের জীবাণু সহজেই শরীরে প্রবেশ করে নানা রোগের সৃষ্টি করে। ডা. বুলবুল এইডস প্রতিরোধে নিরাপদ যৌন সঙ্গম, রক্ত আদান-প্রদানে নিয়মনীতি মেনে চলার পরামর্শ দেন তাঁর বক্তব্যে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. কে এন এম জাহাঙ্গীর বলেন, বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। সাধারণ জনগণের মধ্যে এইচআইভির সংক্রমণ খুবই নগণ্য। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার ১ শতাংশের নিচে।
ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশা গ্রহণকারী, যৌনকর্মী ও তাদের খদ্দের এবং হিজড়াদের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে ডা. জাহাঙ্গীর বলেন, এইচআইভির বিষয়ে তাদের অধিক সচেতন করে তুলতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রাইনা মাসলুন বলেন, এইচআইভি অনিরাপদ যৌন মিলন, রক্তের সংস্পর্শে এবং আক্রান্ত মা থেকে শিশুতে সংক্রমণ হতে পারে। তবে হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে, স্পর্শ বা করমর্দনে, একই থালা-বাসনে একসঙ্গে খাবার খেলে, একই পুকুরে গোসল করলে, একই পায়খানা ব্যবহার করলে, কীটপতঙ্গ যেমন মশা-মাছি ইত্যাদির কামড়ের মাধ্যমে এইডস হয় না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. বাহালুল খান বাহার স্থানীয়ভাবে হিজড়াদের উৎপাত, মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা যদি চায় পুলিশ প্রশাসন সমাজসেবা অফিসের সহায়তায় তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে।
সভায় জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, হিজড়া, ইমাম শ্রেণির ৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।