নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে ২৯ জনের প্রাণহানির পর টনক নড়েছে ডিপিডিসি, ওয়াসা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের। সংস্থাগুলো বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও সড়ক মেরামত কাজ শুরু করেছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ থাকার কথা বলে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তাই ক্যামেরার সামনে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববিসহ সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা গ্যাস পাইপের পাওয়া ছয়টি লিকেজ দেখেন।

এদিকে তিতাস গ্যাস নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিত্যক্ত পাইপ অপসারণের কাজ চলছে।

ডিপিডিসি মসজিদের গেটের সামনে থাকা ট্রান্সফরমার একটু দূরে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে। অপরিকল্পিতভাবে এলোমেলো অবস্থায় থাকা প্লাস্টিকের পানির পাইপগুলোর সংস্কারকাজ করছে ওয়াসা। আর সড়কের হাঁটুপানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন পরিষ্কার ও সড়ক সংস্কারকাজ করছে।

মডেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুর রহমান আজ বিস্ফোরণে নিহত ২৯ জনের পরিবারকে ৫০ হাজার ও আহতদের পরিবারকে ৩০ হাজার করে টাকা প্রদান করেন।

পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আবদুস সাত্তার নামের আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৯ জনে।

আবদুস সাত্তার (৪০) রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান বলে ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

গত ৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। মসজিদের ভেতরে ৫০ জনের মতো মুসল্লি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩৭ জনকে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এঁদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৯ জন মারা গেলেন। অপর আটজনের মধ্যে সাতজনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ ঘটনায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ফতুল্লা অফিসের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।