গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান ও স্থল হামলায় শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জনের বেশি। আল-ওয়েহদা স্ট্রিট, শাতি শিবির, নাসের ও রিমাল এলাকায় একাধিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। খবর আল জাজিরার।
রিমাল এলাকা থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছেন, কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই হামলা হয়। হতাহতদের মরদেহ সরিয়ে নিচ্ছে চিকিৎসা দল, আর সাধারণ মানুষ ধ্বংসস্তূপে জীবিতদের খুঁজছেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় প্রায় প্রতি আট-নয় মিনিট অন্তর একটি করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে, যার “বিধ্বংসী পরিণতি” বেসামরিকদের ওপর পড়ছে।
চিকিৎসা সূত্র বলছে, ইসরায়েলি হামলার পাশাপাশি বিতর্কিত ত্রাণ কেন্দ্র থেকে সাহায্য আনতে গিয়ে আরও ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
একইদিন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেখানে তিনি হামাসকে পরাজিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আমরা কাজ শেষ না করা পর্যন্ত থামব না।”
তার বক্তব্য শুরুর আগেই একাধিক দেশের প্রতিনিধি সভাকক্ষ ত্যাগ করে প্রতিবাদ জানান। নেতানিয়াহু দাবি করেন, তার বক্তব্য গাজায় লাউডস্পিকারে প্রচারিত হয়েছে এবং বাসিন্দাদের ফোনেও পাঠানো হয়েছে—যা প্রত্যাখ্যান করে ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত নারী রান্দা হানুন বলেন, “এটা মিথ্যা, আমরা কোনো বার্তা পাইনি।”
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মধ্য গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর অপুষ্টি ও চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গাজায় এখন পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত অন্তত ৪৪০ জন মারা গেছেন, যার মধ্যে ১৪৭ জন শিশু।
এদিকে আন্তর্জাতিক চিকিৎসাসংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানিয়েছে, গাজা সিটিতে তাদের একাধিক ক্লিনিক ইসরায়েলি ট্যাংক ও বিমান হামলার কারণে কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজার হাসপাতালগুলো অচল হয়ে পড়েছে, ওষুধ ও জনবলের মারাত্মক সংকট চলছে, আর শত-শত মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।

এ অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার বলেন, তিনি গাজা যুদ্ধ শেষ করতে ও বন্দিদের মুক্তির জন্য “চুক্তির কাছাকাছি” আছেন। তবে তিনি কোনো সময়সূচি বা বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) তার সঙ্গে নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।