রুশ ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্রিয় পোল্যান্ড ও ন্যাটো বাহিনী

রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণের সময় দেশটির আকাশসীমায় প্রবেশ করা একাধিক ড্রোন ভূপাতিত করেছে পোল্যান্ড ও ন্যাটো বাহিনী।
আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোরে পোল্যান্ডের আকাশসীমায় বেশ কয়েকটি ড্রোন ঢোকার পর যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয় বলে জানিয়েছে পোলিশ সেনাবাহিনী। এটিই প্রথমবারের মতো পোল্যান্ড ও ন্যাটো বাহিনীর সরাসরি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা। ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া পশ্চিমাদের পরীক্ষা করছে। খবর আল জাজিরার।
পোল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়, “আজকের আক্রমণের সময় রুশ ড্রোন বারবার আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ডারের অনুরোধে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে এবং ভূপাতিত ড্রোনগুলো শনাক্তের কাজ চলছে।”
সেনাবাহিনী জানায়, আকাশসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোলিশ ও ন্যাটো সামরিক বিমান মোতায়েন করা হয়েছে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক নিশ্চিত করেছেন, একাধিক আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনায় বিশেষ অভিযান চলছে। তিনি বলেন, তিনি ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বুধবার সকালে জরুরি মন্ত্রিসভা বৈঠক ডাকা হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিস্লাভ কসিনিয়াক-কামিশ বলেন, “শত্রুপক্ষের ড্রোনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা ন্যাটো কমান্ডের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার আটটি ড্রোন পোল্যান্ডের দিকে ছোড়া হয়েছে। এটিকে তিনি ইউরোপের জন্য “অত্যন্ত বিপজ্জনক নজির” বলে উল্লেখ করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা কমিশনার আন্দ্রিউস কুবিলিয়াস সীমান্ত রক্ষায় “ড্রোন ওয়াল” গড়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে “সামরিক কার্যক্রমের” কারণে পোল্যান্ডের চারটি বিমানবন্দর — ওয়ারশ’র শোপিন বিমানবন্দর, রেজেসজো-জাসিওকা, মডলিন ও লুবলিন বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে সবগুলো পুনরায় চালু হলেও পূর্বাঞ্চলের লুবলিন বিমানবন্দর এখনও বন্ধ রয়েছে।
এ ঘটনায় পোল্যান্ড বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে বেলারুশ সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। কারণ, রাশিয়া ও বেলারুশ শুক্রবার থেকে যৌথ সামরিক মহড়া “জাপাদ-২০২৫” শুরু করতে যাচ্ছে। পোল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সিন কিয়ারভিনস্কি বলেছেন, “যতক্ষণ না পোলিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে, সীমান্ত খোলা হবে না।”

অন্যদিকে, বেলারুশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে পোলিশ দূতাবাস কর্মকর্তাকে তলব করেছে। তারা বলেছে, সীমান্ত বন্ধের পদক্ষেপ “অতিরঞ্জিত” এবং প্রতিবেশী দেশগুলোকে বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা।
লিথুয়ানিয়াও ঘোষণা দিয়েছে যে, বেলারুশ ও রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করা হবে।