পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় নিহত ২০০’র বেশি, অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া (কেপি) প্রদেশে শুক্রবারের (১৫ আগস্ট) ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক প্রাণহানি ও অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ পর্যন্ত ২০০’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ডুবে গেছে সড়ক, সেতু, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বহু স্থাপনা। খবর ডনের।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, স্বাত জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় সাতটি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং ৩৮টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসে গেছে তিনটি স্কুল, আর তিনটিতে আংশিক ক্ষতি হয়েছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২১ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে।
স্বাত, বুনের, শাংলা, বাজাউর, লোয়ার দির, বাত্তাগ্রাম ও মানসেহরায় প্রাণহানি ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মানসেহরায় প্রবল বৃষ্টিতে ইন্দুস, সিরেন ও কুনহার নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে। কাগান ভ্যালিতে আটকে পড়া সাতজন পর্যটককে পুলিশ উদ্ধার করেছে।
লোয়ার দির জেলায় বন্যায় ২৫ জন পর্যটক আটকা পড়েন। স্থানীয় প্রশাসন, রেসকিউ ১১২২ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
বুনের জেলায় রেসকিউ ১১২২ দল ২ হাজার ৭১ জন মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৩০০ জন স্কুল শিক্ষার্থী। জেলা প্রশাসন পুরো এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
উদ্ধার অভিযানে নিয়োজিত একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে পাঁচ ক্রু সদস্য নিহত হন। এ ঘটনায় আজ (শনিবার) একদিনের শোক ঘোষণা করেছে কেপি সরকার। প্রদেশজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
বন্যায় পীর বাবা বাজার প্লাবিত হয়েছে, গোকান্দের একটি মসজিদ ভেঙে পড়েছে এবং বহু গবাদিপশু মারা গেছে। পাহাড়ি ভূমিধসে বহু সড়ক বন্ধ হয়ে পড়েছে।

অ্যাবোটাবাদ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে, ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পণ্যের ক্ষতি করেছে। করাচি মহাসড়ক (কেএকে) ডুবে গিয়ে যান চলাচল ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
স্বাত জেলায় বন্যায় বিদ্যুৎ অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৩২ কেভি গ্রিড স্টেশন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৪১টি ফিডার বন্ধ হয়ে গেছে এবং পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। মালাম জাব্বা বিদ্যুৎ লাইনও ধ্বংস হয়েছে।

ফেডারেল বিদ্যুৎমন্ত্রী আওয়াইস আহমদ লাগহারির নির্দেশে পেশোয়ার ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (পেস্কো) বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারে জরুরি কাজ শুরু করেছে। অতিরিক্ত কর্মী, ট্রান্সফরমার, খুঁটি, কেবল ও ভারী যন্ত্রপাতি দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।