পাকিস্তানে তৃতীয় লিঙ্গের তিন নারীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার

পাকিস্তানের করাচিতে তৃতীয় লিঙ্গের তিন নারীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) মহাসড়কের পাশ থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। এটিকে দেশটিতে তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
করাচি শহরের পুলিশ কর্মকর্তা জাভেদ আহমেদ আবরো এএফপিকে নিশ্চিত করে বলেন, একটি মহাসড়কের পাশে তিন তৃতীয় লিঙ্গের নারীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া গেছে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজ চলছে। হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।
সিন্ধ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সৈয়দ মুরাদ আলী শাহ এক বিবৃতিতে বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিরা সমাজের ‘অরক্ষিত’ অংশ। আমাদের সকলের উচিত তাদের প্রতি মর্যাদা ও সম্মান দেখানো।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, পাকিস্তানে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ওপর সহিংসতা বাড়ছে। তবে অনেক ঘটনাই অপ্রকাশিত থেকে যায়।
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে কাজ করেন স্থানীয় কাউন্সিলর শাহজাদি রাই। তিনি বলেন, যখন ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা এতো খোলাখুলিভাবে চালানো হয়, তখন এমন ঘটনা ঘটাই স্বাভাবিক। সরকার ও আইসশৃঙ্খলাবাহিনী আমাদের পাশে রয়েছে। তবুও এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটছে, যা সমাজের গভীরে গেঁথে থাকা ঘৃণা প্রমাণ করে।

সমাজ কর্মীরা জানান, যেসব তৃতীয় লিঙ্গের নারী যৌনকর্মী হতে বাধ্য হন বা পুরুষদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, তাদের ওপর প্রায়ই এ ধরনের সহিংসতা ঘটে থাকে। মেহরুব মইজ এই হত্যাকাণ্ডকে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জীবনের ওপর একটি ‘সমন্বিত আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন।
২০১৮ সালে পাকিস্তানে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার সংক্রান্ত একটি আইন পাস করা হয়েছিল, যা প্রগতিশীল পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসিত হয়। কিন্তু ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো এই আইনকে ‘ইসলামি আইনের পরিপন্থী’ এবং ‘পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে এর বিরোধিতা করে। ফলস্বরূপ, একটি শরিয়া আদালত সেই আইনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা বাতিল করে দেয়।