ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে ইউক্রেনের পাশে ‘দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর’ প্রতিশ্রুতি ইউরোপের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আলোচনার পরিকল্পনাকে ইউরোপীয় নেতারা স্বাগত জানালেও তারা ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা মস্কোর ওপর চাপ বজায় রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন। খবর আলজাজিরার।
ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় কমিশন শনিবার (৯ আগস্ট) গভীর রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এই অবস্থান তুলে ধরে।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছিলেন, শান্তি কেনার জন্য কিয়েভ রাশিয়ার কাছে কোনো ভূখণ্ড সমর্পণ করবে না।
যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা বলেন, যুদ্ধের সফল অবসানের একমাত্র উপায় হলো কার্যকর কূটনীতি, ইউক্রেনকে সমর্থন ও রাশিয়ার ওপর চাপ। তারা বলেন, যুদ্ধের যেকোনো কূটনৈতিক সমাধানে অবশ্যই ইউক্রেন ও ইউরোপের নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইউক্রেনে শান্তির পথ ইউক্রেন ছাড়া নির্ধারণ করা যাবে না। নেতারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি তাদের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তারা ইউক্রেনের জন্য সামরিক ও আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপীয় নেতাদের এই যৌথ বিবৃতিকে মূল্যায়ন ও সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির জন্য যারা ইউক্রেন ও তার জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ।

এদিকে, ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টার বিষয়ে আলোচনা করতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে লন্ডনে বৈঠক করেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক এই আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, যুদ্ধবিরতি জরুরি– কিন্তু সম্মুখ রেখা কোনো সীমান্ত নয়। তিনি কিয়েভের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ইউক্রেন রাশিয়ার কাছে কোনো আঞ্চলিক ছাড় দেবে না।
রয়টার্স-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা একটি পাল্টা প্রস্তাব পেশ করেছেন, যেখানে অন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত বলে দাবি করা হয়েছে। এই নথিতে আরও বলা হয়েছে, যেকোনো আঞ্চলিক বিনিময় অবশ্যই পারস্পরিক হতে হবে ও এর সঙ্গে জোরালো নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফোনে কথা বলেছেন। তারা ইউক্রেনে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ইউক্রেন ছাড়া তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যাবে না এবং ইউরোপকেও এই সমাধানের অংশ হতে হবে, কারণ তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।