যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামাসের সিদ্ধান্ত চান ট্রাম্প

গাজায় সম্ভাব্য ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) তিনি বলেন, হামাসের কাছ থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি জবাব আসার কথা রয়েছে। খবর সিএনএনের।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমরা দেখব কী ঘটে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা জানতে পারব। কাতার এই সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েল ও হামাসের কাছে একটি সংশোধিত প্রস্তাব পেশ করেছিল, যা ইসরায়েল মঙ্গলবার (১ জুলাই) গ্রহণ করেছে। হামাস অবশ্য জানিয়েছে, তারা অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার পর তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।
গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য একটি চুক্তি চূড়ান্ত করতে ইসরায়েল প্রয়োজনীয় শর্তাবলিতে সম্মত হয়েছে।
এরপরই নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে ট্রাম্প হামাসকে এই প্রস্তাব মেনে নিতে সতর্ক করে বলেন, আমি আশা করি, মধ্যপ্রাচ্যের ভালোর জন্য হামাস এই চুক্তি মেনে নেবে। কারণ এর চেয়ে ভালো কিছু হবে না — কেবল খারাপই হবে। প্রস্তাবটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি কাতার ও মিশরকে ধন্যবাদ জানান।
জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যা আছে
সর্বশেষ এই প্রস্তাবটি আগের আলোচনার পরিকল্পনা থেকে মৌলিকভাবে ভিন্ন নয়। জিম্মি মুক্তির সংখ্যা ও পূর্ববর্তী অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময়কাল একই রয়েছে। তবে প্রস্তাবটিতে হামাসের দাবি অনুযায়ী দুটি গুরুত্বপূর্ণ ছাড় দেওয়া হয়েছে; জিম্মিদের মুক্তি পুরো সময়সীমা জুড়ে ধাপে ধাপে হবে এবং যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি ব্যাপক চুক্তি না হলেও ৬০ দিনের পরেও যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে, যার জন্য ট্রাম্প সরাসরি গ্যারান্টি দিয়েছেন।
আলোচনার সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো সময়জুড়ে ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি ও ১৮ জন মৃত জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে, হামাস আটজন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল অনির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দি ও আটককৃতদের মুক্তি দেবে এবং উত্তর গাজার পূর্ব-নির্ধারিত স্থানগুলো থেকে তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করবে। ইসরায়েল এরপর সপ্তম দিনে কিছু মৃত জিম্মির মরদেহ হস্তান্তরের পর দক্ষিণ গাজার কিছু অংশ থেকে তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করবে।
প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইসরায়েল ও হামাস একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা শুরু করবে। গাজায় মোট ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি এখনও রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হয়। শেষ দুইজন জীবিত জিম্মিকে যুদ্ধবিরতির পঞ্চাশতম দিনে মুক্তি দেওয়া হবে। এই চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলের অনুরোধে জিম্মিদের কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হবে।

যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সাহায্য সংস্থাগুলোর মাধ্যমে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে শুরু করবে। যেমনটি ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া আগের যুদ্ধবিরতির সময় হয়েছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি-আমেরিকান জিম্মি ইদান আলেকজান্ডার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সাথে দেখা করেন। তিনি বলেন, গাজায় চলমান যুদ্ধ অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।