ট্রাম্পের জয় : অভিনন্দন বনাম অভিঘাত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় শুধু আমেরিকাকে নয় সারা বিশ্বকেই নাড়া দিয়েছে। বিশ্ব নেতা ও রাজনীতিকদের অনেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি অনেকের মনে আঘাতও লেগেছে, তাঁরা আহত হয়েছেন!
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রথম বিশ্ব নেতা যিনি জয়ের পরপরই ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে অভিনন্দন জানানোর সময় আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে দুই দেশ সহযোগিতামূলক কাজ অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে ‘দৃঢ়’ বলে বর্ণনা করেন। ট্রাম্পকে পাঠানো বার্তায় তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় আমি আপনাকে আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে অভিনন্দন জানাই। জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সার্বজনীন মূল্যবোধের বাঁধনে দৃঢ়ভাবে বাঁধা। জাপান-যুক্তরাষ্ট্র জোটের বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করতে আপনার সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের জন্য আমি এগিয়ে যেতে চাই। এর মাধ্যমে আমাদের দুই দেশ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখতে পারে।’
অন্যদিকে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লুফভেন জানিয়েছেন, তিনি হোয়াইট হাউসে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে দেখতে চেয়েছিলেন।
ট্রাম্পের ক্ষমতাগ্রহণের মধ্য দিয়ে ঘৃণার রাজনীতির পরিবেশ বিরাজমান হবে বলে উল্লেখ করে স্টিফেন লুফভেন এসভিটি চ্যানেলকে বলেন, ‘আমি মনে করি নির্বাচনের এই ফলাফল অনেক বিভক্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করবে। একই সময় এটি এমন একটি পরিস্থিতি যা আমাদের প্রস্তুত করেছে। বিভিন্ন কারণে আমি হিলারি ক্লিনটনের জয় চেয়েছিলাম। যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে সুইডেন সম্ভাব্য সবকিছু করবে, কে প্রেসিডেন্ট সেটি কোনো বিষয় নয়।’
জার্মান ভাইস চ্যান্সেলর জিগমা গ্যাব্রিয়েল ট্রাম্পের জয়কে জার্মানি ও ইউরোপের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। গ্যাব্রিয়েল জার্মান সংবাদপত্রের গ্রুপ ফাঙ্কে মিয়েনগ্রুপেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ট্রাম্প হচ্ছেন একটি নতুন স্বেচ্ছাচারী এবং উগ্র জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পথ প্রদর্শক। তিনি আমাদের জন্য একটি হুমকিও।’ তিনি আরো বলেন, ‘যদি আমরা এই স্বেচ্ছাচারী আন্দোলন প্রতিহত করতে চাই তাহলে আমাদের দেশ ও ইউরোপের পরিবর্তন আবশ্যক।’
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-মার্ক এঁহু বলেছেন,‘নির্বাচনের এই ফলাফল অবশ্যই ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দূর্বল হবে না।’ এর সঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেছেন, ফ্রান্স যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবেই থাকবে এবং দেখবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টের নীতি কী হয়।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি আগে হিলারিকে সরাসরি সমর্থন জানিয়েছেন। তবে নির্বাচনের ফলাফলের পর তিনিও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইতালির শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় থাকবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
রোমে এক ভাষণ শুরুর আগে মাত্তিও রেনজি বলেন, ‘আমি তাকে শুভকামনা জানাই। ইতালীয়-আমেরিকান বন্ধুত্ব দৃঢ়।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের জাতির নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিতে সম্পর্ক জোরদার করব।’
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক বিবৃতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে তাঁর শাসনামলে শান্তি অর্জিত হবে।