‘মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে রাশিয়া’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন গোয়েন্দা কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাটরা এ অভিযোগ করেছেন।
‘গ্যাং অব এইট’ নামে পরিচিত এই আইনপ্রণেতারা মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য।
সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সিনেটর ডিয়ানি ফাইনস্টাইন ও প্রতিনিধি পরিষদের ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্য অ্যাডাম সিফ যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যেসব তথ্য আমরা পেয়েছি তার ওপর ভিত্তি করে আমরা এই উপসংহারে এসেছি যে, রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ঐকান্তিক ও সমন্বিত চেষ্টা চালাচ্ছে।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আমাদের নির্বাচনের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে এবং নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যেও এটা করা হতে পারে - আমরা রাশিয়ানদের এই আচরণের পেছনে আর কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না।’ তারা আরো বলেন, ‘রুশ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশেই গোয়েন্দা সংস্থা এসব কাজ করছে।’
কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, একটি কারণে যুক্তরাষ্ট্র একই ধরনের অভিযোগ করছে না। রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশনের (ডিএনসি) ই-মেইল উইকিলিকসের কাছে যে ফাঁস করেছে, সে ব্যাপারে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চিত নয়। রুশ, চীনা এবং আমেরিকান সাইবার গুপ্তচররা নিয়মিতভাবে একটি পক্ষের জন্য অন্য পক্ষের রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর তথ্য হ্যাক করে।
কিন্তু কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতে, এটা স্পষ্ট যে, ই-মেইল ফাঁস করার জন্য রাশিয়াই দায়ী এবং এই বিবৃতিকে মূল্যায়ন করতে যুক্তরাষ্ট্রের অকাট্য প্রমাণের প্রয়োজন নেই।
সাবেক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও বর্তমানে হিলারি ক্লিনটনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বরত মাইকেল ভাইকারস গত বুধবার বলেন, “মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর রাশিয়ার সাইবার হামলায় ‘সীমা লঙ্ঘন হয়েছে’ এবং সেটা ‘আতঙ্কজনক’।”
ভাইকারস বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা সত্যিই সীমা লঙ্ঘন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি কঠোরভাবে এর মোকাবিলা না করে তাহলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে থামানো যাবে না।’
রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা যদি হ্যাকিং করেও থাকে, সে ক্ষেত্রে কীভাবে এর জবাব দেবে সে সম্পর্কে ওবামা প্রশাসন কিছু জানায়নি।
ফাইনস্টাইন ও সিফ যৌথ বিবতিতে আরো বলেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতি অবিলম্বে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে নির্দেশ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে এমন কোনো বিদেশি সরকারের পাশে আমেরিকানরা দাঁড়াবে না। আমরা আশা করি, আমেরিকানরা ঐক্যবদ্ধভাবে রাশিয়ার এই প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করবে।’