ভারতের ১৮৯ পাকিস্তানি বন্দী ‘নিখোঁজ’!

কিছুদিন আগেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে আকস্মিক পাকিস্তান সফর করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ ছাড়া সামনেই দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যবসাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। তবে সবকিছুর আগে দুই দেশকে যে সমস্যাটা সমাধান করতে হবে, তা হলো ভারতে ১৮৯ পাকিস্তানি বন্দীর ‘নিখোঁজ’ হওয়ার রহস্য।
গতকাল শুক্রবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বন্দীদের তালিকা বিনিময় হয়। দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া বন্দী বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী দেশ দুটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দী থাকা ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকদের ফেরত দেওয়া হবে।
২০০৮ সালের ৩১ মে এই চুক্তিটি প্রথম সই করা হয়। সেখানে বলা হয়, ভারতের কারাগারে বন্দী পাকিস্তানি এবং পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ভারতীয়দের প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি এবং ১ জুলাই বিনিময় করা হবে।
সে অনুযায়ী গতকালও বন্দী বিনিময়ের নির্ধারিত দিন ছিল। সেসময় ভারতের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গরমিলের অভিযোগ আনে পাকিস্তান। ভারতের তালিকায় দেখা যায়, তাদের কাছে ২৭১ জন পাকিস্তানি নাগরিক বন্দী আছে, যার মধ্যে ১৭ জন পেশায় জেলে। তবে পাকিস্তান সরকার বলছে, তাদের কাছে থাকা তালিকা অনুযায়ী ৪৬০ জন মানুষ ভারতের জেলে বন্দী আছে। এদের মধ্যে ১১৩ জন জেলে। অর্থাৎ ১৮৯ জন বন্দীর কোনো হিসাব মিলছে না।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই হিসাবের গরমিলকে বেশ বড় ইস্যু করে দেখছে পাকিস্তান। এমনকি আগামী ২৫ জানুয়ারি ভারতের পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্করের পাকিস্তান সফরের আগেই বিষয়টির সমাধান চাইছে তারা।
দুই দেশের মধ্যে এই কারাবন্দীর বিষয়টি ভারত-পাকিস্তানের জন্য বেশ স্পর্শকাতর ইস্যু। গতবছর উলফা নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মধ্যে যে যৌথ বৈঠক হয় সেখানেও দুই দেশের কারাগারে থাকা বন্দী বিশেষত জেলেদের নিজ নিজ দেশের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। নরেন্দ্র মোদি গত রমজান মাসে নওয়াজ শরিফকে বলেছিলেন, এই পবিত্র মাসের সম্মানে ভারতের কারাগারে বন্দী থাকা জেলেদের তাদের নৌকাসহ মুক্ত করে দেওয়া হবে। অবশ্য তখনো বন্দীর সংখ্যা নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়।