বৃষ্টি নামাতে রকেট নিক্ষেপের পরীক্ষায় সফল ভারত

শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টি নামাতে রকেট (ক্ষেপণাস্ত্র) নিক্ষেপের পরীক্ষায় সফলতা পেয়েছে ভারত। গত শনিবার খরাপীড়িত মহারাষ্ট্রের একটি গ্রামে এই পরীক্ষা চালানো হয়। রাসায়নিক দ্রব্যে পূর্ণ একটি রকেট মেঘের নির্দিষ্ট অংশ লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। রকেটটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত করলেও অবশ্য আবহাওয়ার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।
চলতি মাসেই দুবার বৃষ্টির নামাতে রকেট নিক্ষেপের পরীক্ষা ব্যর্থ হয়। অবশেষে গত শনিবার একটি রকেট সফলভাবে মেঘের নির্দিষ্ট অংশে নিক্ষেপ করা হয়। মুম্বাইভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব প্রফেশনাল স্টাডিজ (আইএসপিএস)-এর গবেষকরা মহারাষ্ট্রের নাশিক জেলার ইয়োলা শহরের কাছে খরাপীড়িত সেইগাঁও গ্রামে এই পরীক্ষা চালায়।
বৃষ্টি নামানোর রকেটের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় চিনি। আর রকেটের মধ্যে থাকে সিলভার আয়োডাইড লবণ।
গবেষকরা বলেন, বৃষ্টি নামানোর জন্য কয়েক মিনিটের ব্যবধানে অনেকগুলো রকেট নিক্ষেপ করতে হয়। রকেটের মধ্যে থাকা রাসায়নিক দ্রব্য মেঘের পরিবর্তন করে বৃষ্টি নামায়। একটি রকেট নিক্ষেপের ৫০ মিনিট পরই বৃষ্টি হওয়ার কথা। চীনে খরাপীড়িত অঞ্চলে প্রায়ই সরকার এমন রকেট ব্যবহার করে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
বৃষ্টি নামানোর জন্য বর্তমানে বিমান থেকে রাসায়নিক দ্রব্য ছিটানো হয়। তবে এই কাজে রকেট ব্যবহারে খরচ তুলনামূলক অনেক কম। মেঘে আঘাত করতে রকেটকে দূরত্ব পাড়ি দেয় চার থেকে ১০ কিলোমিটার। বিমানের চেয়ে রকেটের মাধ্যমে বৃষ্টিপাত ঘটানোর সাফল্যের হারও বেশি। বিমানে সাফল্যের হার যেখানে ৪০ শতাংশ, সেখানে রকেটের সাফল্যের হার ৮০ শতাংশ।
গবেষণা সংস্থার কর্মকর্তা আবদুর রহমান ভানু বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় গবেষকদলের সদস্যরা গ্রামের নির্দিষ্ট স্থানে ক্যাম্প করেন। এর লক্ষ্য ছিল রকেট নিক্ষেপের জন্য সঠিক সময় ও স্থান ঠিক করা। আর সম্ভাবনা বাড়াতে আবহাওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হয়।
গবেষকদলের কাছে ছিল তিনটি রকেট, যার একটি শনিবার মেঘ লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়। আবহাওয়ার কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় বাকি দুটি রটে নিক্ষেপ করা হয়নি।
আবদুর রহমান ভানু বলেন, নিক্ষেপিত রকেটটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় ওঠে এবং লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এটিই বর্তমান সাফল্য। ২৫ আগস্ট আবার ওই স্থানে ফিরে আসবেন গবেষকরা। এবার লক্ষ্য হবে বৃষ্টি নামানো।
চলতি বছর নাশিক জেলায় প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হয়নি। প্রয়োজনের মাত্র ৩৯ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়েছে। বর্ষাকাল এরই মধ্যেই পার হয়েছে। বর্তমানে এলাকার বাঁধে পানি আছে মাত্র ৩৪ শতাংশ।