করোনাভাইরাসে মৃত বেড়ে ৪২৫, গুজব বন্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আহ্বান

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ভাইরাসটির সংক্রমণে চীনে মারা গেছে ৪২৫ জন। আক্রান্ত অবস্থায় আছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে আট দিনে হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন চীনা শ্রমিক ও চিকিৎসকরা। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভাইরাসটি নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে বেইজিং।
নভেল করোনাভাইরাস বা করোনা গোত্রের নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যখন বিশ্বের ২৪টিরও বেশি দেশের মাথাব্যথার কারণ, তখন এই রোগ নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগ করেছে খোদ চীন, যেখান থেকেই প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সৃষ্টি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, জনস্বাস্থ্য নিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা আর সাম্প্রতিক সময়ে চীন ভ্রমণ করা নাগরিকদের দুই সপ্তাহ ধরে প্রবেশাধিকার বন্ধ রেখে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ওয়াশিংটন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করে অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরও একই ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ড, ইসরায়েল, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মিসর, ফিনল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি সরকারও চীনের সঙ্গে ফ্লাইট বাতিলের পাশাপাশি চীনফেরত নাগরিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার পাশাপাশি ভয় আর আতঙ্ক না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। আমরা সব দেশকে আহ্বান জানাব, আপনারা তথ্যপ্রমাণ যাচাই করে ব্যবস্থা নিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আপনাদের সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। ভাইরাস নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানো বন্ধে কাজ করছি আমরা।’
এদিকে চীনে অব্যাহত মৃত্যুর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দিনরাত এক করে উহানের দক্ষিণে এক হাজার শয্যার আস্ত একটি হাসপাতাল বানিয়ে ফেলেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। তাও মাত্র আট দিনে। নতুন ওই হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। তৈরি হচ্ছে একই ধরনের আরেকটি হাসপাতাল।
এসব হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্বে থাকা চায়নিজ একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক প্রকৌশলী বলেন, ‘হুশেনশান হাসপাতালটি এ অবস্থায় খুবই জরুরি। সাধারণ হাসপাতাল থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত সব রোগী একটি হাসপাতালে থাকলে রোগটি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং রোগীদের সুস্থ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতি হবে।’
অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রভাবে চীনের শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন শুরু হয়েছে। নববর্ষের ছুটি শেষে গতকাল সোমবার সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্সে ৮ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হয়েছে, যা বিগত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে কয়েকগুণ।