পর্বতারোহণের সময় অলিম্পিক স্বর্ণজয়ীর মৃত্যু

জার্মানির দুইবারের অলিম্পিক বায়াথলন (স্কিইং ও রাইফেল শুটিংয়ের মিশ্র ইভেন্ট) চ্যাম্পিয়ন লারা ডালমিয়ের পাকিস্তানে পর্বতারোহণের সময় দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩১ বছর বয়সী এই অ্যাথলেট পাকিস্তানের করাকোরাম পাহাড়ে ওঠার সময় ৫৭০০ মিটার উচ্চতায় পাথর ধসের কবলে পড়েন। এসময় তার সঙ্গী মারিনা ইভা জরুরি সহায়তা চেয়ে যোগাযোগ করেন। জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞ পর্বতারোহীদের নিয়ে গঠিত একটি উদ্ধারকারী দল দ্রুত অভিযান শুরু করেন। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে তা চলমান রাখা সম্ভব হয়নি।
ডালমিয়ের ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান বুধবার জানায়, সম্ভবত ২৮ জুলাই দুর্ঘটনার দিনেই তার মৃত্যু হয়। ডালমিয়ের ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়,
‘লরার সুস্পষ্ট ও লিখিত ইচ্ছা ছিল এই ধরনের পরিস্থিতিতে কারো জীবন বিপন্ন করে যেন তাকে উদ্ধারের চেষ্টা না করা হয়। তার ইচ্ছা ছিল, এমন ঘটনায় যেন তার মরদেহ যেন পর্বতেই থেকে যায়।’
পরিবারের পক্ষ থেকেও এই ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ২৯ জুলাই উদ্ধার অভিযান শেষ ঘোষণা করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘লাইলা পিকে বর্তমানে চলমান পাথরধস ও পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার কারণে মরদেহ উদ্ধারের প্রচেষ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং অসম্ভব হয়ে উঠেছে।’
‘তিনি আমাদের দেখিয়ে গেছেন—নিজের স্বপ্ন ও লক্ষ্যকে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করা এবং সবসময় নিজের প্রতি সৎ থাকা কতটা মূল্যবান।’
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিও শোক প্রকাশ করেছে তার মৃত্যুতে। কমিটির সভাপতি কির্স্টি কভেনট্রি বলেন, ‘ডালমিয়ের মৃত্যু আমাদের অলিম্পিক পরিবারের জন্য গভীর শোকের সৃষ্টি করেছে। তিনি তার পছন্দের জায়গা পর্বতের মাঝেই প্রাণ হারিয়েছেন। চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি।’
জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেনমিয়ের শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘ডালমিয়ের ছিলেন দেশের একজন দূত ও সীমান্ত ছাড়িয়ে বিশ্বজুড়ে শান্তিপূর্ণ, আনন্দময় ও ন্যায়সঙ্গত সহাবস্থানের এক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।”
ডালমিয়ের ছিলেন অভিজ্ঞ পর্বতারোহী। ২০১৮ সালের পিয়ংইয়ং শীতকালীন দুটি স্বর্ণ ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেন। তিনি প্রথম নারী যিনি একই অলিম্পিকে স্প্রিন্ট ও প্যারাস্যুট ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছেন। এছাড়া ২০১৯ সালের মে মাসে এই প্রতিযোগিতা থেকে অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত ৫টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে আরও ১৫টি পদক (৭টি স্বর্ণ) জিতেছেন লরা।