ইভেন্ট এক, কিন্তু শিরোপা দুজনের!

ইভেন্ট একই, তবে পোডিয়ামে স্বর্ণপদক গলায় দাঁড়ালেন দুজন। এমন বিস্ময়কর ঘটনার জন্ম আজ মেয়েদের ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে। যুক্তরাষ্ট্রের সিমোন ম্যানুয়েল আর কানাডার পেনি ওলেকসিয়াক পাশাপাশি দাঁড়িয়ে গাইলেন নিজেদের জাতীয় সংগীত।
এক ইভেন্টে দুজনের শিরোপা জয়কে সাঁতারের পরিভাষায় বলা হয় ‘ডেড হিট’। আজ রিও ডি জেনিরোর অলিম্পিক অ্যাকুয়াটিক স্টেডিয়ামে ম্যানুয়েল আর ওলেকসিয়াক সাঁতার শেষ করেছেন একই সঙ্গে, ৫২.৭০ সেকেন্ডে। তাই দুই যুগ পর ‘ডেড হিট’-এর সাক্ষী হলো অলিম্পিক। ১৯৯২ সালে বার্সেলোনা অলিম্পিকে ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইলে একই টাইমিং নিয়ে স্বর্ণ জিতেছিলেন মার্কিন জুটি গ্যারি হল জুনিয়র ও অ্যান্থনি আর্ভিন।
বার্সেলোনাতেই সর্বশেষ কানাডিয়ান হিসেবে সাঁতারে স্বর্ণ জিতেছিলেন মার্ক টিউক্সবেরি। ১৬ বছর বয়সী ওলেকসিয়াককে নিয়ে তাই এখন সাড়া পড়ে গেছে কানাডায়। ওলেকসিয়াকের চেয়ে চার বছরের বড় ম্যানুয়েলের কীর্তি অবশ্য আরো বিশাল। প্রথম আফ্রো-আমেরিকান হিসেবে অলিম্পিক সাঁতারের কোনো একক ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছেন তিনি।
এমন অসাধারণ কীর্তি গড়ে ম্যানুয়েল আপ্লুত। সংবাদ সম্মেলনে আবেগাক্রান্ত কণ্ঠে তিনি বলেছেন, “আমি যে অন্যদের অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারি, তা জানতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত। তবে একই সঙ্গে আমি চাই, আমার মতো আরো অনেকে যেন সাঁতারে উঠে আসে। সিমোনের মতো আর কাউকে যেন ‘কৃষ্ণাঙ্গ সাঁতারু’ শুনতে না হয়। ‘কৃষ্ণাঙ্গ সাঁতারু’ শুনলে মনে হয়, আমি বোধ হয় স্বর্ণপদক জয়ের যোগ্য নই, আমার রেকর্ড ভাঙার যোগ্যতা নেই। কিন্তু এটা সত্যি নয়। আমিও অন্যদের মতো কঠোর পরিশ্রম করি। আমিও সাঁতার ভালোবাসি আর অন্যদের মতো জিততে চাই।”
সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গর মৃত্যুতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ম্যানুয়েলের বিশ্বাস, তাঁর সাফল্য আফ্রো-আমেরিকানদের নতুন পথের সন্ধান দেবে, ‘এই পদক শুধু আমার জন্য নয়। আমাদের দেশের সব আফ্রো-আমেরিকানের জন্য। তাঁরাই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন, আমার শিক্ষকের ভূমিকা পালন করেছেন। আশা করি, এই সাফল্য তাঁদেরও অনুপ্রাণিত করবে।’
অন্যদিকে ওলেকসিয়াক নিজের সাফল্যে ভীষণ বিস্মিত। তিনি বলেছেন, ‘যুগ্মভাবে স্বর্ণ জয় অবিশ্বাস্য ঘটনা। আমি ভাবতেই পারিনি যে জিতব। আমার মতো তাঁরও (ম্যানুয়েল) এই জয় প্রাপ্য। আমার বয়স মাত্র ১৬ বছর। জীবনের প্রথম অলিম্পিকেই স্বর্ণপদক জয়ের চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না।’