১০০৯ রানের বিস্ময়কর ইনিংসের নেপথ্য কাহিনী

একশ, দুইশ বা তিনশ না, ভারতের ১৫ বছর বয়সী বিস্ময় বালক প্রণব ধানাওয়াড়ে খেলেছে ১০০৯ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস। ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় তুলে গড়েছে যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ইনিংসের নতুন রেকর্ড। প্রণবের প্রশংসায় মুখর হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট অঙ্গন। নতুন রেকর্ড গড়ায় প্রণবকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার, মহেন্দ্র সিং ধোনি, হরভজন সিংদের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটাররাও। তবে প্রণব কীভাবে এই ইনিংস খেলেছে তার নেপথ্য কাহিনী জানলে হয়তো বিস্ময়ের মাত্রা কিছুটা কমেও আসতে পারে।
অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ের স্কুল প্রতিযোগিতায় কেসি গান্ধী স্কুলের হয়ে প্রণব এই ১০০৯ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেছে আর্য গুরুকুল স্কুলের বিপক্ষে। প্রণবের প্রতিপক্ষ দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারের বয়স ছিল ১২ বছরের কাছাকাছি। আর্য গুরুকুল স্কুলের প্রধান ছয় খেলোয়াড়ই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেনি পরীক্ষা থাকার কারণে। ভারতের জনপ্রিয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে লড়াইটাকে বর্ণনা করা হয়েছে ‘ডেভিড বনাম গোলিয়াথ’-এর লড়াই হিসেবে। এখানে অবশ্য বাইবেলের কাহিনীর মতো জয় ছোট্ট ডেভিডের হয়নি। ১২ বা ১৩ বছরের ছোট ‘ডেভিড’দের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন ‘গোলিয়াথ’রূপী প্রণব। একের পর এক চার ছক্কা মেরে নাজেহাল করে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের বোলার-ফিল্ডারদের। তাড়াহুড়া করে দল গঠন করায় এমন অনেককেই মাঠে দেখা গেছে, যাঁরা খেলতে নেমেছিল জীবনের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ।
প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের অনেক কম বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মাঠের পরিধিও বড় ভূমিকা রেখেছে প্রণবের বিস্ময়কর ইনিংসটির পেছনে। স্কয়ার লেগ বাউন্ডারির পরিধি ছিল মাত্র ৩০ গজ। আলতো ঠোকা দিয়েই একের পর এক ছয় হাঁকিয়ে গেছে প্রণব। ৩২৩ বলে ১০০৯ রান করার পথে প্রণব মেরেছে ৫৯টি ছয় ও ১২৯টি চার। একের পর এক ক্যাচ-স্টাম্পিংও মিস করে গেছে প্রণবের প্রতিপক্ষ আর্য গুরুকুল স্কুলের খুদে ক্রিকেটাররা। সব মিলিয়ে প্রণব ‘জীবন’ পেয়েছে ২৪ বার (২১টি ক্যাচ ও তিনটি স্টাম্পিং)।
তবে এত কিছুর পরও প্রণব যা করেছে তা সত্যিই বিস্ময় জাগায়। ভারতের অধিনায়ক ধোনি যেমনটা বলেছেন, ‘এতগুলো রান করা কোনো হাসির কথা না। ম্যাচের পরিস্থিতি বা মাঠের ধরন যা-ই হোক না কেন; এটা একটা দারুণ ব্যাপার। তার অবশ্যই অনেক প্রতিভা আছে। সে এজন্য নিশ্চয়ই অনেক পরিশ্রম করেছে। কারণ আমি এত লম্বা সময় ধরে ব্যাটিংই করতে পারব না। বিরক্ত হয়ে যাব।’