এনজিওগ্রাম করতে ভয়?

অনেকে এনজিওগ্রাম করতে গেলে ভীত হয়ে পড়েন। আসলে এনজিওগ্রাম করতে কি কোনো ভয়ের বিষয় আছে? এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫৮৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুর রহমান পাটওয়ারী।
প্রশ্ন : এনজিওগ্রাম সাধারণত রোগীরা করাতে চান না। ভীতি থাকে। এই ভীতির কারণ কী?
উত্তর : এর কারণও আছে। কারণ হলো এনজিওগ্রাম একটি পরীক্ষা। তবে এটি একটি অপারেশন থিয়েটারের মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়, কিছু ঝুঁকি তো আছেই। এই জন্যই তো ভয় থাকে। যেমন দেখা যায় হার্ট ফেইলিউর থাকে, বুকে বেশি ব্যথা থাকে, এসব রোগীর জন্য হয়তো এনজিওগ্রাম একটু ঝুঁকির হয়ে যায়। নয়তো এটি তেমন ঝুঁকির কিছু নয়। এনজিওগ্রাম হলো এমন একটি পরীক্ষা যেটা একটা এক্স-রে, রক্তনালিতে কোথাও ব্লক আছে কি না, সেটা সহজ একটি এক্স-রের মাধ্যমে দেখা হয় যে কোথায় কোথায় ব্লক আছে। এটা একটা এক্স-রেই। ডাই দিয়ে দেখা হয় যে ব্লক আছে কি না। এই পরীক্ষায় মাত্র পাঁচ থেকে ১০ মিনিট সময় লাগে। সহজ পরীক্ষা। অজ্ঞানও করা হয় না। শুধু রক্তনালিতে ইনজেকশন দিই। এই ধরনের পায়ের অথবা হাতের রক্তনালির মাধ্যমে এনজিওগ্রাম করা হয়। খুব ভয় পাওয়ার মতো আসলে তেমন কোনো পরীক্ষা নয়।
প্রশ্ন : এই পরীক্ষার পর কিসের ভিত্তিতে রোগীর চিকিৎসা দেন?
উত্তর : এনজিওগ্রাম করার পর আমরা দেখি রক্তনালিতে কোনো ব্লক আছে কি না, ব্লক থাকলে এর পরিমাণ কত। যেমন মুখের কাছে যদি হয়, ৫০ ভাগ বা তার বেশি তখন একে সিগনিফিকেন্ট ধরা হয়। এর নিচে যদি হয়, ৭০ ভাগ বা তার ওপরে যদি হয়, এটাতে রিং লাগানো যায় কি না। আর যদি দেখা যায় রিং লাগানো যাচ্ছে না, বাইপাস করতে হবে। আর যদি পরিমাণে কম থাকে ব্লক, সেই ক্ষেত্রে মেডিসিনের মাধ্যমে চলবে, ওষুধ চলবে, ব্লকের পরিমাণ যদি কম থাকে, শতাংশ যদি কম থাকে, কিন্তু সবগুলো ব্লকই হলো ৫০ ভাগের নিচে। সেই রোগীর তো কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই। সেই রোগী ওষুধ খাবে, ডায়েট করবে। ইসকেমিক হার্ট ডিজিজের ক্ষেত্রে অনেকগুলো কথা বলছি, কোলেস্টেরল খাওয়া যাবে না, শুধু ওষুধ খাবে, আর জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করবে। এই অভ্যাসগুলোকে পালন করতে হবে, সঙ্গে ওষুধ খাবে, ভালো হয়ে যাবে। দেখা গেছে যে সব ক্ষেত্রে যে রিং লাগাতে হবে বা বাইপাস করতে হবে, বিষয়টি কিন্তু সেই রকম নয়। অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের পর একধরনের ওষুধ আছে দেখা যায়, ব্লক একেবারে চলে যায়। তাহলে ব্লক চলে গেলে সেই ক্ষেত্রে তার কিছুই লাগছে না। শুধু ওষুধ খাবে।