ঘুমের সমস্যায় কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

ঘুমের সমস্যা হলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, রাগ বাড়ে, কাজে উদ্যম হারিয়ে ফেলার সমস্যা হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৫৩৩তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. শামসুল আহসান। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কত দিন ধরে নিদ্রাহীনতা হতে থাকলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন?
উত্তর : যদি মাসের অধিক এই সমস্যা হয়, তাহলে আমরা চিকিৎসকের কাছে আসার কথা বলতে পারি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রয়েছে, স্লিপ হাইজিন। আমাদের দাঁতের পরিচর্যার ক্ষেত্রে যেমন ওরাল হাইজিন কথাটি রয়েছে, তেমন স্লিপ হাইজিন। আমাদের জীবনযাত্রা যদি আমরা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে ওষুধ ছাড়াও ঠিক হয়ে যেতে পারে। যদি এমন হয় একজন ব্যক্তি সারা দিন কাজ করছেন, তবে পরে ১১টা বা সাড়ে ১১টার দিকে রাতের খাবার খাচ্ছেন, পর পর শুয়ে যাচ্ছেন। ওনার এই জীবনযাপনের ধরনের জন্য কিন্তু ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। সে ক্ষেত্রে আমরা বলি রাতের খাবার ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে খেয়ে ফেলা ভালো। ঘুমানোর কমপক্ষে তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবারটা সেরে নেওয়া প্রয়োজন। রাতে কম খাওয়া। রাতের বেলা চা-কফি এগুলো না খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বদ অভ্যাস আছে, বিছানায় শুয়ে শুয়ে টিভি দেখা। ইন্টারনেটে কাজ করা। যদি আপনি বিছানায় শুয়ে অন্য যেকোনো কাজ করেন, তাহলে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। এ জন্য আমরা বলি যে বিছানায় বসে টিভি না দেখা বা কোনো ডিভাইস না ব্যবহার করা, এগুলো। আরেকটি হলো রাতে হয়তো ঘুম হলো না, দিনের বেলা ঘুমাচ্ছেন। এটিও সমস্যার একটি কারণ। সুতরাং আপনি একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যাবেন, নির্দিষ্ট সময় উঠে যাবেন। ঘুম না হলেও অযাচিত বিছানায় শুয়ে থাকবেন না। দুপুরবেলা খাবার পর যে অল্প সময়ের জন্য আমরা শুয়ে থাকি, সেটি না করাই ভালো।
প্রশ্ন : জটিলতা কী হতে পারে এ ক্ষেত্রে?
উত্তর : যদি মনোরোগের কারণে সমস্যা হয়, যদি বিষণ্ণতার জন্য হয়, তাহলে ওই রোগগুলোর চিকিৎসা করলে সমস্যা মিটে যাবে। যদি এটা অন্য কোনো অসুখের জন্য হয়, মাদকাসক্তির জন্য হয়, এটি না গ্রহণ করলে সমস্যা ঠিক হবে। আর নিদ্রাহীনতার কারণ যদি হয় জীবনযাপনের অনিয়মিত ভাব, তাহলে সমস্যা নির্ণয় করে স্লিপ হাইজিনকে ঠিক করতে হবে। এ ছাড়া যে ওষুধ খেলে ঘুমের অসুবিধা হতে পারে, সেসব ওষুধ না খাওয়া।
এ ছাড়া দুই দেশের সময়ের তারতম্যের জন্য যদি কোনো সমস্যা হয়, সেটি সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়।