ঘামের দুর্গন্ধ দূর করবেন যেভাবে

গরমের দিনে সবচেয়ে অস্বস্তিকর ব্যাপার হচ্ছে ঘাম এবং ঘামের দুর্গন্ধ। প্রথমে ঘর্মগ্রন্থি থেকে ঘাম নিঃসৃত হয় এবং পরে ব্যাকটেরিয়াযুক্ত হয়ে দুর্গন্ধ হয়। এসব ব্যাকটেরিয়া সবারই ত্বকে থাকে এবং গরমে ও ভেজা অবস্থায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। এভাবেই শরীরের যেসব স্থান ঘামে, সেখান থেকে দুর্গন্ধ বের হয়।
ব্যাকটেরিয়া কিন্তু সব ধরনের ঘামকে দুর্গন্ধযুক্ত করে না। সারা শরীরের ত্বকে ঘর্মগ্রন্থি রয়েছে। দুই ধরনের ঘর্মগ্রন্থি রয়েছে : ইক্রাইন ও এপোক্রাইন গ্রন্থি। ঘর্মগ্রন্থিগুলো শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও স্নায়বিক কারণে ঘর্মগ্রন্থি থেকে স্বচ্ছ, লবণাক্ত তরল পদার্থ বের হয়, যাকে আমরা ঘাম বলি। ঘামলে শরীর ঠান্ডা হয়। ইক্রাইন গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত ঘামে কোনো দুর্গন্ধ হয় না। কিন্তু এপোক্রাইন গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত ঘামের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া যুক্ত হয়ে দুর্গন্ধ হয়। এপোক্রাইন গ্রন্থিগুলো দুই বাহুর নিচে ও যৌনাংশে বেশি মাত্রায় থাকে।
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করবেন কীভাবে—
* প্রতিদিন অন্তত দুবার গোসল করুন।
* অবাঞ্ছিত লোম ও চুলের জন্য ঘামের দুর্গন্ধ বেশি হতে পারে। তাই অবাঞ্ছিত লোম ও চুল উঠিয়ে ফেলবেন।
* প্রতিদিন পরিষ্কার ধোয়া কাপড় পরবেন।
* প্রতিদিন দুবার ডিওডেরান্ট, অর্থাৎ ঘামের গন্ধনাশক শরীরে লাগাবেন।
* খুব বেশি ঘামলে অ্যান্টিপারসিপিরেন্ট লাগাবেন একদিন অন্তর।
ডিওডেরান্ট ও অ্যান্টিপারসিপিরেন্ট কিন্তু একই জিনিস নয়। ডিওডেরান্টে অ্যান্টিসেপটিক ও সুগন্ধি উপাদান থাকে। অ্যান্টিপারসিপিরেন্টে একই সঙ্গে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা ঘাম নিঃসরণ কমায়। অ্যান্টিপারসিপিরেন্ট ২৫ থেকে ৩৫ ভাগ ঘাম নিঃসরণ কমায়।
খুব বেশি ঘামলে এটাও লক্ষ করতে হবে, কোনো অসুখের জন্য এটা হচ্ছে কি না, নানা রকম বিপাকীয় গোলমাল, হরমোনের অসুখ, সংক্রামক অসুখ, কিছু ওষুধ, এমনকি কিছু খাবারের জন্যও এমনটি হতে পারে। খুব বেশি পেঁয়াজ ও রসুন খেলেও ঘাম বেশি হতে পারে। এ রকমটি হলে চিকিৎসক, বিশেষ করে চর্মবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপিকা, ফার্মাকোলজি অ্যান্ড থেরাপিউটিক্স, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ।