রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস নাকি অস্টিওআর্থ্রাইটিস, কীভাবে বুঝবেন

অনেকে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও অস্টিওআর্থ্রাইটিসকে এক অসুখ ভেবে থাকেন। আসলে এটি সম্পূর্ণ আলাদা।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস একটি অটোইমিউন রোগ এবং এটা সচরাচর প্রথম জীবনে হয়। অন্যদিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিস একটি বয়স সম্পর্কিত রোগ। এটি কার্টিলেজের ক্ষয় বা ছিঁড়ে যাওয়ার জন্য হয়।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সাধারণত ২৫ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে ঘটে থাকে, তবে এটা শিশুদেরও আক্রান্ত করে। তবে অস্টিওআর্থ্রাইটিস সাধারণত ৪০ বছরের বেশি বয়সী লোকদের আক্রান্ত করে।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে প্রায় সমানভাবে শরীরের দুই পাশের, অর্থাৎ ডান ও বাম দিকের অস্থিসন্ধিগুলো আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিসে শরীরের পৃথক অস্থিসন্ধি আক্রান্ত হয় অথবা প্রথম দিকে শরীরের শুধু একপাশের অস্থিসন্ধিগুলো আক্রান্ত হয়।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত অস্থিসন্ধিগুলো লাল ও গরম হয় এবং ফুলে যায়। অন্যদিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিসে অস্থিসন্ধিগুলো সাধারণত লাল ও গরম হয় না।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস অনেক অস্থিসন্ধিকে আক্রান্ত করে, সাধারণত হাত ও পায়ের ছোট ছোট জোড়া বেশি আক্রান্ত হয়। এটা কনুই, কাঁধ, কব্জি, হিপ, হাঁটু ও গোড়ালির গাঁটকেও আক্রান্ত করে। অন্যদিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিস সাধারণত শরীরের ওজন বহনকারী অস্থিসন্ধিগুলোকে এবং যেসব অস্থিসন্ধি বেশি ব্যবহৃত হয় (যেমন হাঁটু ও হিপ), সেসব অস্থিসন্ধিকে বেশি আক্রান্ত করে।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস শরীরের সব তন্ত্রকে আক্রান্ত করতে পারে। সে সঙ্গে সার্বিক অসুস্থতা বোধ হয় এবং অবসন্নতা দেখা দিতে পারে, শরীরের ওজন কমে যেতে পারে। অন্যদিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিসে সাধারণত আক্রান্ত জোড়াগুলোতে অস্বস্তিবোধ হয়।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে সকালবেলা দীর্ঘ সময় আক্রান্ত জোড়াগুলো শক্ত থাকে। অন্যদিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত জোড়াগুলো সকালবেলা অল্প সময় শক্ত থাকে।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে মারাত্মক অবসন্নতা দেখা দেয়। অন্যদিকে অস্টিওআর্থ্রাইটিসে তেমন অবসন্নতা দেখা দেয় না।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ।