মোবাইল ফোন থেকে ক্যানসার হয়?

মোবাইল ফোন থেকে বিচ্ছুরিত রেডিয়েশনে ক্যানসার হয়, এমন ভয়ে অনেকেই আক্রান্ত। সাধারণের ধারণা, যেকোনো রেডিয়েশন থেকেই বুঝি ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আসলে বিষয়টি কিন্তু তা নয়।
ক্যানসার সৃষ্টির জন্য কোনো রেডিয়েশনের শরীরের রাসায়নিক বা কেমিক্যাল বন্ড ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। শুধু কয়েক ধরনের রেডিয়েশন, এক্স-রে ও গামা রেডিয়েশন হচ্ছে কালপ্রিট। দৃশ্যমান কোনো আলো বা রেডিওওয়েভকে সব সময়ই নিরাপদ বলে মনে করা হয়।
রেডিয়েশন ঘুরে বেড়ায় ফোটন হিসেবে। পথের মধ্যে একটি রাসায়নিক বন্ড দিয়ে জানালা তৈরির কথা চিন্তা করুন। এই জানালা গলে সব রেডিয়েশন যেতে পারবে না। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এক্স-রে ফোটন অনেকটা গলফ বলের মতো, যা সহজেই জানালা ভেঙে ফেলার ক্ষমতা রাখে। মোবাইল ফোন থেকে বিচ্ছুরিত রেডিও ফোটন এক্স-রের তুলনায় কয়েক লাখ গুণ কম শক্তিশালী। গলফ বলের সঙ্গে তুলনায় যাকে তুলার বল বলা যেতে পারে। তাই সেই রাসায়নিক বন্ডের জানালা ভাঙতে এ রকম তুলার রেডিও সারা জীবন ছুড়ে মারলেও তা কোনোদিনই জানালাকে ভাঙতে সক্ষম হবে না। এটাই হচ্ছে কোয়ান্টাম মেকানিকসের মূল সুর।
মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে আপনার কান গরম হয়ে গেলে একটি বিষয় খেয়াল করুন। আপনি একটি ব্যাটারিচালিত যন্ত্রকে একটানা কিছুটা সময় ধরে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা শরীরের মাথার সঙ্গে চেপে ধরে আছেন। এ অবস্থায় যন্ত্র ও কান উভয়ই গরম হবে, এটাই স্বাভাবিক। শুধু তা-ই নয়, মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে অনেক সময় মাথাব্যথা হয়। কারণ, সাধারণ ল্যান্ডফোনের তুলনায় মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্কজনিত তারতম্যের জন্য কথা বলার পর কিছুটা অস্বস্তি হতেই পারে। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। মোবাইল ফোনের সঙ্গে ক্যানসারের কোনো সম্পর্ক এখন পর্যন্ত চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রথম দিকে বেশ গবেষণা হয়েছে; কিন্তু গবেষণায় সে রকম কোনো প্রমাণ মেলেনি।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ।