হাসি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়!

‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল’—প্রবাদটা সবারই জানা। তবে এই স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখা কিন্তু সহজ কথা নয়। স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি।
হাসি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
অসুস্থতা থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য বর্তমানে আমেরিকার চিকিৎসকরা রোগীদের হাসানোর কথা বলছেন। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, হাসি একজন অসুস্থ মানুষকে কেবল সুস্থ হতেই সহায়তা করে না, বরং তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও বাড়িয়ে তোলে। চিকিৎসকরা বলেন, হাসলে শরীরে টি লিম্ফোসাইট ন্যাচারাল কিলার সেল ও গামা ইন্টারফেরনের কার্যকলাপ বেড়ে যায়। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ত্বরান্বিত করে। তাঁদের মতে, হাসলে শরীরে বেশি করে অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং মাংসপেশিগুলোও সজীব থাকে।
বিষণ্ণতা হৃদরোগ ঘটায়
কেউ যদি টানা দুই সপ্তাহ বিষণ্ণতায় ভোগেন কিংবা মনের মধ্যে অতিরিক্ত অসুখী ভাব থাকে, তাহলে পরবর্তী ১৩ বছরে তাঁর হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এ তথ্য জানাচ্ছেন বাল্টিমোরে অবস্থিত ‘জনস হপকিনস স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ’-এর একদল গবেষক। তাঁদের মতে, বিষণ্ণতা শরীরের অভ্যন্তরে জৈব-রাসায়নিক পরিবর্তন সাধন করে। এতে হৃৎপিণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রক্ত জমাট বাঁধে। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে সর্বদা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।
মোটা নারীদের আর্থ্রাইটিস বেশি হয়
কম ওজনের কিংবা স্বাভাবিক ওজনের নারীদের চেয়ে মোটা নারীদের আর্থ্রাইটিস বা অস্থিসন্ধির প্রদাহ বেশি হয়। তথ্যটি আমেরিকার গবেষকদের। পুরুষদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। তবে স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে অতিরিক্ত ওজনের অথবা কম ওজনের পুরুষরা আর্থ্রাইটিসের শিকার বেশি হন।
তাই আর্থ্রাইটিসের আক্রমণ এড়াতে চিকিৎসক অথবা পুষ্টিবিদদের পরামর্শমতো স্বাভাবিক ওজনের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
আঙুর হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে
হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে চিকিৎসকরা বরাবরই অ্যাসপিরিন দিয়ে থাকেন। কারণ, অ্যাসপিরিন রক্তনালির মধ্যকার রক্তজমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে হৃৎপিণ্ডকে রক্ষা করে থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম করলে কিংবা মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে শরীরে অ্যাড্রেনালিন নামক এক ধরনের হরমোন নির্গত হয়। এটি অ্যাসপিরিনের প্রভাবকে বাধা দেয়। বিজ্ঞানীরা এ ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তাই অ্যাসপিরিনের সঙ্গে এক গ্লাস আঙুরের রস খেতে বলছেন। কারণ, আঙুরের রসে রয়েছে এমন কিছু প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান, যা মূলত হৃৎপিণ্ডকে সতেজ ও সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।