যেসব অভ্যাসে ত্বকে বলিরেখা পড়ে

রোদে পোড়া, ধূমপান, পানিশূন্যতা- এসব ত্বকে বলিরেখার ফেলার জন্য দায়ী এ কথা প্রায় সবাই জানি। তবে দৈনন্দিন জীবনে আমাদের এমন কিছু অভ্যাসও রয়েছে যা বলিরেখার জন্য দায়ী। এগুলো দূর করতে পারলে বলিরেখা প্রতিরোধ অনেকটা সহজ হবে। ইয়াহু হেলথ জানিয়েছে এমন কিছু অভ্যাসের কথা।
স্ট্র-এর ব্যবহার
পানীয় জাতীয় কোনো জিনিস পানের ক্ষেত্রে সাধারণত আমরা স্ট্র ব্যবহার করি। স্ট্র-এর ব্যবহার হয়তো আপনার দাঁতের জন্য ভালো কিন্তু এটা ত্বকের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। আপাত দৃষ্টিতে স্ট্র-এর ব্যবহার বেশ সাধারণ মনে হলেও ধীরে ধীরে এটি মুখের ত্বকের চারপাশে বলিরেখা তৈরি করে। যখন কোনো কিছু পানের জন্য আমরা বারবার স্ট্র ব্যবহার করি তখন পেশির সঞ্চালন মুখের সংযোগ টিস্যুর কোলাজেনকে ভেঙে দেয়। কোলাজেন হলো দেহের বিভিন্ন সংযোগ টিস্যুর কাঠামোগত প্রোটিন। এর ভাঙনের ফলে ত্বকে স্থায়ীভাবে দাগ হয়। তাই যেকোনো পানীয় গ্রহণের সময় স্ট্র-এর ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
হঠাৎ তাপমাত্রার উঠানামা
গরমের মধ্যে ঘাম হচ্ছে এমন অবস্থায় যদি এসির ঠাণ্ডা বাতাসে যাওয়া হয় তখন দুর্ভাগ্যবশত এই বাতাস আপনার ত্বককে শুষ্ক করে তুলবে, ঘামকে শুষে নেবে। যা আপনার চোখ এবং মুখের ত্বককে কুচকে দেবে এবং এটাই বলি রেখা ফেলার জন্য দায়ী। এই সমস্যা সমাধানে এসির মধ্যে গেলে পানি পান করতে পারেন।
চুইঙ্গাম চিবানো
চুইঙ্গাম চিবানো গালের বেশির সঞ্চালন বাড়ায়। যখন পেশির কাজ বারবার হয় তখন এটি ত্বকের কোলাজেনকে ভেঙে দেয়। ফলে গালের এবং ঠোঁটে বলিরেখা পড়ে। যদি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আপনি বারবার চুইঙ্গাম চাবান তবে এই অভ্যাস বাদ দিয়ে ভ্রমণে উপযোগী ছোট বোতলের মাউথ ওয়াশ সঙ্গে রাখতে পারেন।
রোদের মধ্যে
রোদের মধ্যে যাঁরা নিয়মিত যান বা যাঁরা এমন কোনো কাজ করেন যাঁদের দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকতে হয় তাঁরা সানগ্লাস ব্যবহার করুন। আর সানগ্লান ব্যবহার করতে না ইচ্ছা করলে অন্তত ব্যাগে সবসময় একটি টুপি রাখার অভ্যাস করুন। কেননা রোদ ত্বকে বলিরেখা তৈরি করে, এটি চোখের চারপাশে ভাঁজ তৈরি করে। তাই বারবার এই বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন গবেষকরা।
একপাশে ঘুমানো
অনেকেই আছেন যাদের পুরো রাত পার হয়ে যায় এক পাশে কাত হয়ে ঘুমিয়ে। এক গবেষণায় দেখা যায়, ৪১ শতাংশ মানুষের ঘুমানোর ভঙ্গি ঠিক সুবিধার নয়। একপাশে হয়ে ঘুমালে নারীর ক্ষেত্রে স্তনে বলিরেখা তৈরি হয়। তবে এটা হবে যদি রাতের পর রাত একইভাবে ঘুমান আপনি। তাই নারীদের চিত হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করা উচিত।
পরিশোধিত চিনি খেলে
পরিশোধিত চিনি কেবল আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, এটা আপনার ত্বকের জন্যও ক্ষতিকর। গবেষকরা বলছেন, প্রচুর পরিমাণে চিনি খাওয়ার কারণে গ্লাইকেশন হতে পারে। যদি শরীরে শর্করার আধিক্য বেশি হয় তখন এই বিষয়টি ঘটে। অতিরিক্ত শর্করার অণুগুলো প্রোটিনের অণুর সঙ্গে যুক্ত হয় যা অ্যাডভান্স গ্লাইকোজেন অ্যান্ড প্রোডাক্ট বা এজিই তৈরি করে। এই এজিই কোলাজেনের ভাঙনের ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে ত্বকে বলিরেখা পড়ে। তাই পরিশোধিত চিনি যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।