হাত ধোবেন কখন?

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু হাত ধুলে পেটের পীড়া কমে যায় ৩৯ শতাংশ। যেমন : ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড, কৃমি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। এ ছাড়া শ্বাসতন্ত্রের রোগ ৫০ শতাংশ কমে। যেমন : ইনফ্লুয়েঞ্জা, কাশি, গলায় ক্ষত, কানের ইনফেকশন ইত্যাদি রোগ কমে যায়।
আমেরিকান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে হাত না ধোয়ার কারণে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ লোক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। হাত না ধোয়ার কারণে তাদের প্রতিবছর চিকিৎসা খাতে খরচ হয় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। তাই বোঝা যায়, হাত ধোয়া কতটা জরুরি। তবে কোন সময়গুলোতে হাত ধুতে হবে, সেটিও আমাদের জানা চাই।
লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই জানিয়েছে সাত সময়ের কথা, যখন হাত ধোয়া জরুরি।
১. অসুস্থ রোগী দেখার পর
যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের ক্ষেত্রে অসুস্থ রোগীর কাছে যাওয়ার সময় একটু সতর্ক হতে হবে। সতর্ক হওয়ার অর্থ হচ্ছে, রোগী দেখার পর আপনাকে অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে। নয়তো আপনিও সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারেন। এ ছাড়া রোগীর কাছে যাওয়ার আগেও হাত ধোবেন। কেননা, আপনার সঙ্গে থাকা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াগুলোও যেন নতুন করে রোগীকে সংক্রমিত না করতে পারে, সেটিও খেয়াল রাখতে হবে।
২. নতুন মায়েদের বেলায়
নতুন মায়েদের অবশ্যই হাত ধোয়ার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। অনেকেই ভাবেন, বাচ্চাদের প্রস্রাব বা মলে কোনো জীবাণু ছড়ায় না। তাই এসব পরিষ্কার করার পর হাত ধোন না তাঁরা। এটা ঠিক নয়। এ সময় হাতে জীবাণু লেগে গিয়ে শিশু এবং আপনাকে অসুস্থ করে দিতে পারে। তাই এসব পরিষ্কারের পর হাত ধুতে হবে এবং ডায়াপার বদলানোর পরও অবশ্যই হাত ধুতে হবে। এ ছাড়া শিশুকে খাবার খাওয়ানো বা খাবার তৈরির আগেও অবশ্যই হাত ধুতে হবে।
৩. ময়লা ধরার পর
ময়লা ধরার পর বা পরিষ্কারের পর হাতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস বৃদ্ধি পায়। ময়লা ধরার পর শরীরে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই ময়লা ধরার পর অবশ্যই হাত ধোবেন।
৪. মলত্যাগের পর
এই কথা প্রায় সবাই জানে। তবে অনেকেই অভ্যাসটি মানেন না। মলের মাধ্যমে অনেক জীবাণু হাতে লেগে যায়। আপনি যতই টিস্যু দিয়ে পরিষ্কার করুন না কেন, জীবাণুর সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই মলত্যাগের পর অবশ্যই হাত ধুতে হবে।
৫. ঠান্ডা লাগলে
ঠান্ডা লাগলে নাক দিয়ে বা কাশির মাধ্যমে কফ বের হয়। নাক পরিষ্কারের পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধোবেন। এ ছাড়া ফ্লু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে এমন আবহাওয়ায়ও হাত ধোয়ার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
৬. খাওয়ার আগে ও পরে
খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। এটা করলে অনেক জীবাণু পেটে যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। খাওয়ার আগে সাবানপানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস না করলে জীবাণু পেটের ভেতর গিয়ে শরীরকে অসুস্থ করে দিতে পারে।
৭. রান্নার আগে
রান্নার আগে অবশ্যই হাত ধোবেন। আপনি নিশ্চয়ই জীবাণু হাতে রান্না করতে চান না? তাই রান্নার করার আগে এবং রান্নার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার (কাটাকাটি, জিনিসপত্র গোছানো) আগে হাত ধুবেন।