কানাডার রয়্যাল অটোয়া হাসপাতালের গবেষকরা দেখেছেন, নিউরোট্রান্সমিটার রিসেপটর জিনের বিভাজনে আত্মহত্যার প্রবণতা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এই রিসেপটরের নাম ৫-এইচটি ২ এ। এটা মস্তিষ্কের রাসায়নিক উপাদান ‘সেরোটোনিন' থেকে সংকেত বহন করে। মেন’স হেলথ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন। 

গবেষকরা মানসিক অস্বাভাবিকতা নেই এমন ১৩১ জন লোকের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে বড় ধরনের বিষণ্ণতায় ভুগছেন, এমন ১২০ জন রোগীর রক্তের নমুনার সঙ্গে তুলনা করে দেখেছেন। এই ১২০ জন রোগীর মধ্যে আবার ৭৮ জনের আত্মহত্যার প্রবণতা ছিল। তাঁদের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে এমন রোগীদের ৫এইচটি ২এ রিসেপটর জিনের বিভাজন হয়েছে ৪১ শতাংশ, আত্মহত্যার প্রবণতা নেই এমন রোগীদের বিভাজনের মাত্রা ২৪ শতাংশ আর সুস্থ লোকের বিভাজন হয়েছে ১৮ শতাংশ। গবেষকদের দৃষ্টিতে এটা বেশ বড় মাত্রার পার্থক্য।

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষের জিনের বিভাজন আরো বেশি হয়। এ কারণে নারীদের চেয়ে পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা নারীদের চেয়ে চার গুণ বেশি। অঞ্চলভেদেও আত্মহত্যার প্রবণতার পরিমাণ কমবেশি হয়। যেমন ফিনল্যান্ডে প্রতি এক লাখ লোকের মধ্যে পুরুষের আত্মহত্যার পরিমাণ ৪১ শতাংশ। বিশ্বে এটি অন্যতম সর্বোচ্চ হার। অথচ প্রতিবেশী নরওয়েতে প্রতি এক লাখে আত্মহত্যার পরিমাণ ১৮ শতাংশ।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।