ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স করেও থমকে আছে মোস্তাকিমের জীবন

শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও অদম্য মানসিক শক্তির এক উজ্জ্বল উদাহরণ তিনি। দারিদ্র্যের কষাঘাত আর শারীরিক প্রতিবন্ধিতার সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করেও থেমে থাকেননি তিনি। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তিনি মোহাম্মদ মোস্তাকিম। বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের কুয়াতপুর গ্রামে।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আর দারিদ্র্যের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি, তারপর এইচএসসি পাস করে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন এই মোস্তাকিম। তবে ডিগ্রি থাকলেও ভাগ্যের চাকা এখনও ঘোরেনি তার। বেকার জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। কিছুদিন আগে স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্টেন (কেজি) স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু যাতায়াত খরচ মেটানোর মতো বেতনও সেখান থেকে পান না তিনি। তবুও তিনি হাসিমুখে বলেন, ‘বেকার বসে থাকা বা বেকার ভাতা নেওয়ার চেয়ে কিছু করা ভালো।’
শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে মোস্তাকিমের পথচলা সহজ নয়। বয়সে তরুণ হলেও এক হাতে লাঠিতে ভর করে চলাফেরা করতে হয় তাকে। হাঁটতে গেলে কিছুক্ষণ পরপর বসে একটু বিশ্রাম নিতে হয়। ভ্যান বা রিকশায় উঠতেও অন্যের সাহায্য লাগে। এই দৃশ্য যে কারও হৃদয় স্পর্শ করে।
মোস্তাকিম আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে কি জীবন চলে? যদি একটি চার্জার বাইক বা হালকা বাহন পেতাম, তাহলে অন্তত নিজে নিজে চলাফেরা করতে পারতাম।’
মোস্তাকিম শুধু নিজেকে নয়, সমাজকে দেখিয়েছেন—ইচ্ছেশক্তি থাকলে সব বাধা জয় করা সম্ভব। এখন প্রয়োজনে কেউ যদি এগিয়ে আসে তার চলার পথটা একটু সহজ করে দিতে, তাহলেই হয়তো মোস্তাকিমের সংগ্রামী জীবনের গল্প বদলে যেতে পারে। হতে পারে সাফল্যের গল্প।