এনসিপির সমাবেশ ঘিরে সহিংসতা : গোপালগঞ্জে ৪৭৭ জনের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচির সমাবেশ ঘিরে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে আরো একটি মামলা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে সদর থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি নিউটন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালসহ ৭৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বর্ণনা থেকে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠি এলাকায় গাছ কেটে সড়কের ওপর ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দেওয়া হয় মহড়া। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জনমনে সৃষ্টি হয় আতঙ্ক।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ ও ৫ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৫টি মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৫ মামলায় মোট ১৬ হাজার ১৬২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ২৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৯১০ জনকে আসামি করা হয়। ১৬ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ৩২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী এবং সমর্থকরা হামলা চালায়। সমাবেশের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীসহ অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওইদিনই প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। গত ২০ জুলাই রাত ৮টায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়। তারপর থেকে গোপালগঞ্জ জেলায় স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।